ওরই গানের তালে তালে আমে জামে শিরীষ শালে
নাচন লাগে পাতায় পাতায় আকুল কল্লোলে।
আমার দুই আঁখি ওই সুরে
যায় হারিয়ে সজল ধারায় ওই ছায়াময় দূরে।
ভিজে হাওয়ায় থেকে থেকে কোন্ সাথি মোর যায় যে ডেকে,
একলা দিনের বুকের ভিতর ব্যথার তুফান তোলে।
৬৪
কখন বাদল-ছোঁওয়া লেগে
মাঠে মাঠে ঢাকে মাটি সবুজ মেঘে মেঘে।
ওই ঘাসের ঘনঘোরে
ধরণীতল হল শীতল চিকন আভার ত’রে-
ওরা হঠাৎ-গাওয়া গানের মতো এল প্রাণের বেগে।
ওরা যে এই প্রাণের রণে মরুজয়ের সেনা,
ওদের সাথে আমার প্রাণের প্রথম যুগের চেনা—
তাই এমন গভীর স্বরে
আমার আঁখি নিল ডাকি ওদের খেলাঘরে—
ওদের দোল দেখে আজ প্রাণে আমার দোলা ওঠে জেগে।
৬৫
আজ নবীন মেঘের সুর লেগেছে আমার মনে।
আমার ভাবনা যত উতল হল অকারণে।
কেমন ক’রে যায় যে ডেকে, বাহির করে ঘরের থেকে,
ছায়াতে চোখ ফেলে ছেয়ে ক্ষণে ক্ষণে।
বাঁধনহারা জলধারার কলরোলে
আমারে কোন্ পথের বাণী যায় যে ব’লে।
সে পথ গেছে নিরুদ্দেশে মানসলোকে গানের শেষে
চিরদিনের বিরহিণীর কুঞ্জবনে।