৬৬
আজ আকাশের মনের কথা ঝরো ঝরো বাজে
সারা প্রহর আমার বুকের মাঝে।
দিঘির কালো জলের ’পরে মেঘের ছায়া ঘনিয়ে ধরে,
বাতাস বহে যুগান্তরের প্রাচীন বেদনা যে
সারা প্রহর আমার বুকের মাঝে।
আঁধার বাতায়নে
একলা আমার কানাকানি ওই আকাশের সনে।
ম্লানস্মৃতির বাণী যত পল্লবমর্মরের মতো
সজল সুরে ওঠে জেগে ঝিল্লিমুখর সাঁঝে
সারা প্রহর আমার বুকের মাঝে।
৬৭
এই সকাল বেলার বাদল-আঁধারে
আজি বনের বীণায় কী সুর বাঁধা রে।
ঝরো ঝরো বৃষ্টিকলরোলে তালের পাতা মুখর ক’রে তোলে রে,
উতল হাওয়া বেণুশাখায় লাগায় ধাঁদা রে।
ছায়ার তলে তলে জলের ধারা ওই
হেরো দলে দলে নাচে তাথৈ থৈ— তাথৈ থৈ।
মন যে আমার পথ-হারানো সুরে সকল আকাশ বেড়ায় ঘুরে ঘুরে রে
শোনে যেন কোন্ ব্যাকুলের করুণ কাঁদা রে।
৬৮
পুব-সাগরের পার হতে কোন এল পরবাসী—
শূন্যে বাজায় ঘন ঘন হাওয়ায় হাওয়ায় সন সন
সাপ খেলাবার বাঁশি।
সহসা তাই কোথা হতে কুলু কুলু কলস্রোতে
দিকে দিকে জলের ধারা ছুটেছে উল্লাসী।