সে দিন এমনি মেঘের ঘটা রেবানদীর তীরে,
এমনি বারি ঝরেছিল শ্যামলশৈলশিরে।
মালবিকা অনিমিখে চেয়ে ছিল পথের দিকে,
সেই চাহনি এল ভেসে কালো মেঘের ছায়ার সনে।
৭২
বাদল-বাউল বাজায় রে একতারা—
সারা বেলা ধ’রে ঝরোঝরো ঝরো ধারা।
জামের বনে ধানের ক্ষেতে আপন তানে আপনি মেতে
নেচে নেচে হল সারা।
ঘন জটার ঘটা ঘনায় আঁধার আকাশ-মাঝে,
পাতায় পাতায় টুপুর টুপুর নূপুর মধুর বাজে।
ঘর-ছাড়ানো আকুল সুরে উদাস হয়ে বেড়ায় ঘুরে
পুবে হাওয়া গৃহহারা।
৭৩
একি গভীর বাণী এল ঘন মেঘের আড়াল ধ’রে
সকল আকাশ আকুল ক’রে।
সেই বাণীর পরশ লাগে, নবীন প্রাণের বাণী আগে,
হঠাৎ দিকে দিগন্তরে ধরার হৃদয় ওঠে ভরে।
সে কে বাঁশি বাজিয়েছিল কবে প্রথম সুরে তালে,
প্রাণেরে ডাক দিয়েছিল সুদূর আঁধার আদিকালে।
তার বাঁশির ধ্বনিখানি আজ আষাঢ় দিল আনি,
সেই অগোচরের তরে আমার হৃদয় নিল হ’রে।
৭৪
আজি হৃদয় আমার যায় যে ভেসে
যার পায় নি দেখা তার উদ্দেশে।
বাঁধন ভোলে, হাওয়ায় দোলে, যায় সে বাদল-মেঘের কোলে রে
কোন্-সে অসম্ভবের দেশে।