৯১
গগনে গগনে আপনার মনে কী খেলা তব।
তুমি কত বেশে নিমেষে নিমেষে নিতুই নব।
জটার গভীরে লুকালে রবিরে, ছায়াপটে আঁকো এ কোন্ ছবি রে।
মেঘমল্লারে কী বল আমারে কেমনে কব।
বৈশাখী ঝড়ে সে দিনের সেই অট্টহাসি
গুরুগুরু সুরে কোন্ দূরে দূরে যায় যে ভাসি।
সে সোনার আলো শ্যামলে মিশালো— শ্বেত উত্তরী আজ কেন কালো।
লুকালে ছায়ায় মেঘের মায়ায় কী বৈভব।
৯২
শ্রাবণ, তুমি বাতাসে কার আভাস পেলে—
পথে তারি সকল বারি দিলে ঢেলে।
কেয়া কাঁদে, ‘যা য় যা য় যায়।’
কদম ঝরে, ‘হা য় হা য় হায়।’
পুব-হাওয়া কয়, ‘ওর তো সময় নাই বাকি আর।’
শরৎ বলে, ‘যাক-না সময়, ভয় কিবা তার—
কাটবে বেলা আকাশ-মাঝে বিনা কাজে অসময়ের খেলা খেলে।’
কালো মেঘের আর কি আছে দিন, ও যে হল সাথিহীন।
পুব-হাওয়া কয়, ‘কালোর এবার যাওয়াই ভালো।’
শরৎ বলে, ‘মিলিয়ে দেব কালোয় আলো—
সাজবে বাদল আকাশ-মাঝে সোনার সাজে কালিমা ওর মুছে ফেলে।’
৯৩
কেন পান্থ, এ চঞ্চলতা।
কোন্ শূন্য হতে এল কার বারতা।
নয়ন কিসের প্রতীক্ষা-রত বিদায়বিষাদে উদাসমত—
ঘনকুন্তলভার ললাটে নত, ক্লান্ত তড়িতবধু তন্দ্রাগতা।