কোথা দূরে বেণুবন গায়, ‘আ য় আ য় আয়।’
তীরে তীরে, সখী, ওই-যে উঠে নবীন ধান্য পুলকি।
কাশের বনে বনে দুলিছে ক্ষণে ক্ষণে—
গাহিছে সজল বায়, ‘আ য় আ য় আয়।’
৯৭
আমারে যদি জাগালে আজি নাথ,
ফিরো না তবে ফিরো না, করো করুণ আঁখিপাত।
নিবিড় বনশাখার ’পরে আষাঢ়মেঘে বৃষ্টি ঝরে,
বাদল-ভরা আলস-ভরে ঘুমায়ে আছে রাত।
বিরামহীন বিজুলিঘাতে নিদ্রাহারা প্রাণ
বরষাজলধারার সাথে গাহিতে চাহে গান।
হৃদয় মোর চোখের জলে বাহির হল তিমিরতলে,
আকাশ খোঁজে ব্যাকুল বলে বাড়ায়ে দুই হাত।
৯৮
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে,
আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে।
এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার বাজি
নূতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে।
রহিয়া রহিয়া বিপুল মাঠের ’পরে নব তৃণদলে বাদলের ছায়া পড়ে।
‘এসেছে এসেছে’, এই কথা বলে প্রাণ, ‘এসেছে এসেছে’ উঠিতেছে এই গান—
নয়নে এসেছে, হৃদয়ে এসেছে ধেয়ে।
৯৯
এসো হে এসো সজল ঘন বাদলবরিষনে—
বিপুল তব শ্যামল স্নেহে এসো হে এ জীবনে।
এসো হে গিরিশিখর চুমি ছায়ায় ঘিরি কাননভূমি,
গগন ছেয়ে এসো হে তুমি গভীর গরজনে।