ব্যথিয়া উঠে নীপের বন পুলক-ভরা ফুলে,
উছলি উঠে কলরোদন নদীর কূলে কূলে।
এসো হে এসো হৃদয়-ভরা, এসো হে এসো পিপাসাহরা,
এসো হে আঁখি-শীতলকরা, ঘনায়ে এসে মনে।
১০০
চিত্ত আমার হারালো আজ মেঘের মাঝখানে—
কোথায় ছুটে চলেছে সে কোথায় কে জানে।
বিজুলি তার বীণার তারে আঘাত করে বারে বারে,
বুকের মাঝে বজ্র বাজে কী মহাতানে।
পুঞ্জ পুঞ্জ ভারে ভারে নিবিড় নীল অন্ধকারে
জড়ালো রে অঙ্গ আমার, ছড়ালো প্রাণে।
পাগল হাওয়া নৃত্যে মাতি হল আমার সাথের সাথি—
অট্ট হাসে ধায় কোথা সে, বারণ না মানে।
১০১
আবার শ্রাবণ হয়ে এলে ফিরে,
মেঘ-আঁচলে নিলে ঘিরে।
সূর্য হারায়, হারায় তারা আঁধারে পথ হয়-যে হারা,
ঢেউ দিয়েছে নদীর নীরে।
সকল আকাশ, সকল ধরা বর্ষণেরই-বাণী-ভরা।
ঝরো ঝরো ধারায় মাতি বাজে আমার আঁধার রাতি,
বাজে আমার শিরে শিরে।
১০২
ধরণী, দূরে চেয়ে কেন আজ আছিস জেগে
যেন কার উত্তরীয়ের পরশের হরষ লেগে।
আজি কার মিলনগীতি ধ্বনিছে কাননবীথি,
মুখে চায় কোন্ অতিথি আকাশের নবীন মেঘে।