ঘিরেছিস মাথায় বসন কদমের কুসুমডোরে,
সেজেছিস নয়নপাতে নীলিমার কাজল প’রে।
তোমার ওই বক্ষতলে নবশ্যাম দূর্বাদলে
আলোকের ঝলক ঝলে পরানের পুলকবেগে।
১০৩
হৃদয়ে মন্দ্রিল ডমরু গুরু গুরু,
ঘন মেঘের ভুরু কুটিল কুঞ্চিত,
হল রোমাঞ্চিত বন বনান্তর—
দুলিল চঞ্চল বক্ষোহিন্দোলে মিলনস্বপ্নে সে কোন্ অতিথি রে
সঘনবর্ষণশব্দমুখরিত বজ্রসচকিত ত্রস্ত শর্বরী,
মালতীবল্লরী কাঁপায় পল্লব করুণ কল্লোলে—
কানন শঙ্কিত ঝিল্লিঝঞ্কৃত।
১০৪
মধু -গন্ধে ভরা মৃদু -স্নিগ্ধছায়া নীপ -কুঞ্জতলে
শ্যাম -কান্তিময়ী কোন্ স্বপ্নমায়া ফিরে বৃষ্টিজলে।
ফিরে রক্ত-অলক্তক-ধৌত পায়ে ধারা -সিক্ত বায়ে,
মেঘ -মুক্ত সহাস্য শশাঙ্ককলা সিঁথি -প্রান্তে জ্বলে।
পিয়ে উচ্ছল তরল প্রলয়মদিরা উন্ -মুখর তরঙ্গিণী ধায় অধীরা,
কার নির্ভীক মূর্তি তরঙ্গদোলে কল -মন্দ্ররোলে।
এই তারাহারা নিঃসীম অন্ধকারে কার তরণী চলে।
১০৫
আমি তখন ছিলেম মগন গহন ঘুমের ঘোরে
যখন বৃষ্টি নামল তিমিরনিবিড় রাতে।
দিকে দিকে সঘন গগন মত্ত প্রলাপে প্লাবন-ঢালা শ্রাবণধারাপাতে
সে দিন তিমিরনিবিড় রাতে।