আমার স্বপ্নস্বরূপ বাহির হয়ে এল, সে যে সঙ্গ পেল
আমার সুদূর পারের স্বপ্নদোসর-সাথে
সে দিন তিমিরনিবিড় রাতে।
আমার দেহের সীমা গেল পারায়ে— ক্ষুব্ধ বনের মন্দ্ররবে গেল হারায়ে।
মিলে গেল কুঞ্জবীথির সিক্ত যূথীর গন্ধে মত্তহাওয়ার ছন্দে,
মেঘে মেঘে তড়িৎশিখার ভুজঙ্গপ্রয়াতে সে দিন তিমিরনিবিড় রাতে।
১০৬
আমি শ্রাবণ-আকাশে ওই দিয়েছি পাতি
মম জল-ছলো-ছলো আঁখি মেঘে মেঘে।
বিরহদিগন্ত পারায়ে সারা রাতি অনিমেষে আছে জেগে।
যে গিয়েছে দেখার বাহিরে আছে তারি উদ্দেশে চাহি রে,
স্বপ্নে উড়িছে তারি কেশরাশি পুরপবনবেগে।
শ্যামল তমালবনে
যে পথে সে চলে গিয়েছিল বিদায়গোধূলি-খনে
বেদনা জড়ায়ে আছে তারি ঘাসে, কাঁপে নিশ্বাসে—
সেই বারে বারে ফিরে ফিরে চাওয়া ছায়ায় রয়েছে লেগে।
১০৭
ভোর থেকে আজ বাদল ছুটেছে— আয় গো আয়
কাঁচা রোদখানি পড়েছে বনের ভিজে পাতায়।
ঝিকি ঝিকি করি কাঁপিতেছে বট—
ওগো ঘাটে আয়, নিয়ে আয় ঘট—
পথের দু ধারে শাখে শাখে আজি পাখিরা গায়।
তপন-আতপে আতপ্ত হয়ে উঠেছে বেলা,
খঞ্জন-দুটি আলস্যভরে ছেড়েছে খেলা।
কলস পাকড়ি আঁকড়িয়া বুকে
ভরা জলে তোরা ভেসে যাবি সুখে