পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ষা
৪৭১

জানে না কিছুই কোন্ মহাদ্রিতলে
গভীর শ্রাবণে গলিয়া পড়িবে জলে,
নাহি জানে তার ঘনঘোর সমারোহে
কোন্ সে ভীষণ জীবন মরণ রাজে॥

১১৫

মনে হল যেন পেরিয়ে এলেম অস্তবিহীন পথ  আসিতে তোমার দ্বারে
মরুতীর হতে সুধাশ্যামলিম পারে॥
পথ হতে আমি গাঁথিয়া এনেছি সিক্ত যুথীর মালা
সকরুণ-নিবেদনের-গন্ধ-ঢালা—
লজ্জা দিয়ো না তারে॥
সজল মেঘের ছায়া ঘনাইছে বনে বনে,
পথ-হারানোর বাজিছে বেদনা সমীরণে।
দূরে হতে আমি দেখেছি তোমার ওই বাতায়নতলে  নিভৃতে প্রদীপ জ্বলে—
আমার এ আঁখি উৎসুক পাখি ঝড়ের অন্ধকারে॥

১১৬

তৃষ্ণার শান্তি,   সুন্দরকান্তি,
তুমি এলে নিখিলের সন্তাপভঞ্জন॥
আঁকো ধরাবক্ষে  দিগ্বধুচক্ষে
সুশীতল সুকোমল শ্যামরসরঞ্জন।
এলে বীরছন্দে   তব কটিবন্ধে
বিদ্যুত-অসিলতা বেজে ওঠে ঝঞ্চন॥
তব উত্তরীয়ে  ছায়া দিলে ভরিয়ে—
তমালবনশিখরে নবনীল-অঞ্জন।
ঝিলির মন্দ্রে  মালতীর গন্ধে
মিলাইলে চঞ্চল মধুকরগুঞ্জন।
নৃত্যের ভঙ্গে  এলে নব রঙ্গে,
সচকিত পল্লবে নাচে যেন খঞ্জন॥