পাতা:গীতবিতান.djvu/৫৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ষা
৪৭৯

অন্তরে কালো ছায়া পড়ে আঁকা
বিমুখ মুখের ছবি মনে রয় ঢাকা,
দুঃখের সাথি তারা ফিরিছে সাথে।
কেন দিলে না মাধুরীকণা, হায় রে কৃপণা।
লাবণ্যলক্ষ্মী বিরাজে ভুবনমাঝে,
তারি লিপি দিলে না হাতে

১৩৫

নিবিড় মেঘের ছায়ায় মন দিয়েছি মেলে,
ওগো প্রবাসিনী, স্বপনে তব
তাহার বারতা কি পেলে।
আজি তরঙ্গকলকল্লোলে দক্ষিণসিন্ধুর ক্রন্দনধ্বনি
আনে বহিয়া কাহার বিরহ।
লুপ্ত তারার পথে চলে কাহার সুদূর স্মৃতি
নিশীথরাতের রাগিণী বহি।
নিদ্রাবিহীন ব্যথিত হৃদয়
ব্যর্থ শূন্যে তাকায়ে রহে।

১৩৬

আমার যে দিন ভেসে গেছে চোখের জলে
তারি ছায়া পড়েছে শ্রাবণগগনতলে।
সে দিন যে রাগিণী গেছে থেমে, অতল বিরহে নেমে গেছে থেমে,
আজি পুবের হাওয়ায় হাওয়ায় হায় হায় হায় রে
কাঁপন ভেসে চলে।
নিবিড় সুখে মধুর দুখে জড়িত ছিল সেই দিন—
দুই তারে জীবনের বাঁধা ছিল বীন।
তার ছিঁড়ে গেছে কবে একদিন কোন্ হাহারবে,
সুর হারায়ে গেল পলে পলে।