১৬২
এবার অবগুণ্ঠন খোলো।
গহন মেঘমায়ায় বিজন বনছায়ায়
তোমার আলসে অবলুণ্ঠন সারা হল।
শিউলিসুরভি রাতে বিকশিত জ্যোৎস্নাতে
মৃদু মর্মরগানে তব মর্মের বাণী বোলো।
বিষাদ-অশ্রুজলে মিলুক শরমহাসি—
মালতীবিতানতলে বাজুক বঁধুর বাঁশি।
শিশিরসিক্ত বায়ে বিজড়িত আলোছায়ে
বিরহ-মিলনে-গাঁথা নব প্রণয়দোলায় দোলো।
১৬৩
তোমার নাম জানি নে, সুর জানি।
তুমি শরৎ-প্রাতের আলোর বাণী।
সারা বেলা শিউলিবনে আছি মগন আপন মনে,
কিসের ভুলে রেখে গেলে আমার বুকে ব্যথার বাঁশিখানি।
আমি যা বলিতে চাই হল বলা
ওই শিশিরে শিশিরে অশ্রু-গলা।
আমি যা দেখিতে চাই প্রাণের মাঝে
সেই মুরতি এই বিরাজে—
ছায়াতে-আলোতে-আঁচল-গাঁথা
আমার অকারণ বেদনার বীণাপাণি॥
১৬৪
মরি লো) কার বাঁশি নিশিভোরে বাজিল মোর প্রাণে
ফুটে দিগন্তে অরুণকিরণকলিকা
শরতের আলোতে সুন্দর আসে,
ধরণীর আঁখি যে শিশিরে ভাসে,
হৃদয়কুঞ্জবনে মুঞ্জরিল মধুর শেফালিকা।