আমার গান যে তোমার গন্ধে মিশে দিশে দিশে
ফিরে ফিরে ফেরে গুঞ্জরি।
পূর্ণিমাচাঁদ তোমার শাখায় শাখায়
তোমার গন্ধ-সাথে আপন আলো মাখায়।
ওই দখিন-বাতাস গন্ধে পাগল ভাঙল আগল,
ঘিরে ঘিরে ফিরে সঞ্চরি।
১৯৩
কার যেন এই মনের বেদন চৈত্রমাসের উতল হাওয়ায়,
ঝুমকোলতার চিকন পাতা কাঁপে রে কার চম্কে-চাওয়ায়।
হারিয়ে-যাওয়া কার সে বাণী কার সোহাগের স্মরণখানি
আমের বোলের গন্ধে মিশে
কাননকে আজ কান্না পাওয়ায়।
কাঁকন-দুটির রিনিঝিনি কার বা এখন মনে আছে।
সেই কাঁকনের ঝিকিমিকি পিয়ালবনের শাখায় নাচে।
যার চোখের ওই আভাস দোলে নদী-ঢেউয়ের কোলে কোলে
তার সাথে মোর দেখা ছিল
সেই সেকালের তরী-বাওয়ায়।
১৯৪
দোলে দোলে দোলে প্রেমের দোলন-চাঁপা হৃদয়-আকাশে,
দোল-ফাগুনের চাঁদের আলোর সুধায় মাখা সে।
কৃষ্ণরাতের অন্ধকারে বচনহারা ধ্যানের পারে
কোন্ স্বপনের পর্ণপুটে ছিল ঢাকা সে।
দখিন-হাওয়ায় ছড়িয়ে গেল গোপন রেণুকা।
গন্ধে তারি ছন্দে মাতে কবির বেণুকা।
কোমল প্রাণের পাতে পাতে লাগল যে রঙ পূর্ণিমাতে
আমার গানের সুরে সুরে রইল আঁকা সে।