পাতা:গীতবিতান.djvu/৬২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০৮
প্রকৃতি

মৃদু  মধুর মদির হেসে  এসো  পাগল হাওয়ার দেশে,
তোমার  উতলা উত্তরীয়  তুমি  আকাশে উড়ায়ে দিয়ো—
এসো হে, এসো হে, এসো হে আমার বসন্ত এসো।

২০৩

বসন্তে কি শুধু কেবল ফোটা ফুলের মেলা রে।
দেখিস নে কি শুক্‌নো-পাতা ঝরা-ফুলের খেলা রে।
যে ঢেউ উঠে তারি সুরে  বাজে কি গান সাগর জুড়ে।
যে ঢেউ পড়ে তাহারও সুর জাগছে সারা বেলা রে।
বসন্তে আজ দেখ্ রে তোরা ঝরা-ফুলের খেলা রে।
আমার প্রভুর পায়ের তলে  শুধুই কি রে মানিক জ্বলে।
চরণে তাঁর লুটিয়ে কাঁদে লক্ষ মাটির ঢেলা রে।
আমার গুরুর আসন-কাছে  সুবোধ ছেলে ক জন আছে।
অবোধ জমে কোল দিয়েছেন, তাই আমি তাঁর চেলা রে।
উৎসবরাজ দেখেন চেয়ে ঝরা-ফুলের খেলা রে।

২০৪

ওগো  দখিন হাওয়া,   পথিক হাওয়া,  দোদুল দোলায় দাও দুলিয়ে
নূতন-পাতার-পুলক-ছাওয়া পরশখানি দাও বুলিয়ে।
আমি  পথের ধারের ব্যাকুল বেণু,  হঠাৎ তোমার সাড়া পেনু গো—
আহা,  এসো আমার শাখায় শাখায় প্রাণের গানের ঢেউ তুলিয়ে।
ওগো  দখিন হাওয়া,  পথিক হাওয়া, পথের ধারে আমার বাসা।
জানি তোমার আসা-যাওয়া, শুনি তোমার পায়ের ভাষা।
আমায়  তোমার ছোঁওয়া লাগলে পরে  একটুকুতেই কঁপন ধরে গো—
আহা,  কানে কানে একটি কথায় সকল কথা নেয় ভুলিয়ে।

২০৫

আকাশ আমায় ভরল আলোয়,  আকাশ আমি ভরব গানে।
সুরের আবীর হানব হাওয়ায়,  নাচের আবীর হাওয়ায় হানে।