আজ ভুবনের দুয়ার খোলা দোল দিয়েছে বনের দোলা—
দে দোল! দে দোল! দে দোল!
কোন্ ভোলা সে ভাবে-ভোলা খেলায় প্রাঙ্গণে।
আন্ বাঁশি— আন্ রে তোর আন্ রে বাঁশি,
উঠল সুর উচ্ছ্বাসি ফাগুন-বাতাসে।
আজ দে ছড়িয়ে ছড়িয়ে শেষ বেলাকার কান্না হাসি—
সন্ধ্যাকাশের বুক-ফাটা সুর বিদায়-বাতি করবে মধুর,
মাতল আজি অস্তসাগর সুরের প্লাবনে।
২৩৭
মন যে বলে চিনি চিনি যে গন্ধ বয় এই সমীরে।
কে ওরে কয় বিদেশিনী চৈত্ররাতের চামেলিরে।
রক্তে রেখে গেছে ভাষা,
স্বপ্নে ছিল যাওয়া-আসা—
কোন্ যুগে কোন্ হাওয়ার পথে, কোন্ বনে, কোন্ সিন্ধুতীরে।
এই সুদূরে পরবাসে
ওর বাঁশি আজ প্রাণে আসে।
মোর পুরাতন দিনের পাখি
ডাক শুনে তার উঠল ডাকি,
চিত্ততলে লাগিয়ে তোলে অশ্রুজলের ভৈরবীরে।
২৩৮
বকুলগন্ধে বন্যা এল দখিন-হাওয়ার স্রোতে।
পুষ্পধনু, ভাসাও তরী নন্দনতীর হতে।
পলাশকলি দিকে দিকে তোমার আখর দিল লিখে,
চঞ্চলতা জাগিয়ে দিল অরণ্যে পর্বতে।
আকাশ-পারে পেতে আছে একলা আসনখানি—
নিত্যকালের সেই বিরহীর জাগল আশার বাণী।
পাতায় পাতায় ঘাসে ঘাসে নবীন প্রাণের পত্র আসে,
পলাশ-জবায় কনক-চাঁপায় অশোকে অশ্বথে।