২৫২
আজি এই গন্ধবিধুর সমীরণে
কার সন্ধানে ফিরি বনে বনে।
আজি ক্ষুব্ধ নীলাম্বরমাঝে একি চঞ্চল ক্রন্দন বাজে।
সুদূর দিগন্তের সকরুণ সঙ্গীত লাগে মোর চিন্তায় কাজে—
আমি খুঁজি কারে অন্তরে মনে গন্ধবিধুর সমীরণে।
ওগো, জানি না কী নন্দনরাগে
সুখে উৎসুক যৌবন জাগে।
আজি আম্রমুকুলসৌগন্ধে, নব পল্লবমর্মরছন্দে,
চন্দ্রকিরণসুধাসিঞ্চিত অম্বরে অশ্রুসরস মহানন্দে,
আমি পুলকিত কার পরশনে গন্ধবিধুর সমীরণে।
২৫৩
এবার ভাসিয়ে দিতে হবে আমার এই তরী—
তীরে ব’সে যায় যে বেলা, মরি গো মরি।
ফুল-ফোটানো সারা ক’রে বসন্ত যে গেল সরে,
নিয়ে ঝরা ফুলের ডালা বলো কী করি।
অল উঠেছে ছল্ছলিয়ে, ঢেউ উঠেছে দুলে,
মর্মরিয়ে ঝরে পাতা বিজন তরুমূলে।
শূন্যমনে কোথায় তাকাস।
ওরে, সকল বাতাস সকল আকাশ
আজি ওই পারের ওই বাঁশির সুরে উঠে শিহরি।
২৫৪
বসন্তে আজ ধরার চিত্ত হল উতলা,
বুকের ’পরে দোলে দোলে দোলে দোলে রে তার পরানপুতলা।
আনন্দেরই ছবি দোলে দিগন্তেরই কোলে কোলে,
গান দুলিছে দোলে দোলে গান দুলিছে নীল-আকাশের হৃদয়-উতলা।