মন্ত্র যে তার লাগল প্রাণে মোহন গানে হায়,
বিকশিয়া উঠল হিয়া নবীন সাজে ওগো নবীন রাজা।
তোমার রঙে দিলে তুমি রাঙিয়া ও তার আঙিয়া ওগো নবীন রাজা।
তোমার মালা দিলে গলে খেলার ছলে হায়—
তোমার সুরে সুরে তাহার বীণা বাজে ওগো নবীন রাজা।
২৫৮
ঝরো-ঝরো ঝরো-ঝরো ঝরে রঙের ঝর্না।
আ য় আ য় আ য় আয় সে রসের সুধায় হৃদয় ভর্-না।
সেই মুক্ত বন্যাধারায় ধারায় চিত্ত মৃত্যু-আবেশ হারায়,
ও সেই রসের পরশ পেয়ে ধরা নিত্যনবীনবর্ণা।
তার কলধ্বনি দখিন-হাওয়ায় ছড়ায় গগনময়,
মর্মরিয়া আসে ছুটে নবীন কিশলয়।
বনের বীণায় বীণায় ছন্দ জাগে বসন্তপঞ্চমের রাগে—
ও সেই সুরে সুরে সুর মিলিয়ে আনন্দগান ধর্-না।
২৫৯
পূর্বাচলের পানে তাকাই অস্তাচলের ধারে আসি।
ডাক দিয়ে যার সাড়া না পাই তার লাগি আজ বাজাই বাঁশি।
যখন এ কূল যাব ছাড়ি পারের খেয়ায় দেব পাড়ি,
মোর ফাগুনের গানের বোঝা বাঁশির সাথে যাবে ভাসি।
সেই-যে আমার বনের গলি রঙিন ফুলে ছিল আঁকা।
সেই ফুলেরই ছিন্ন দলে চিহ্ন যে তার পড়ল ঢাকা।
মাঝে মাঝে কোন্ বাতাসে চেনা দিনের গন্ধ আসে,
হঠাৎ বুকে চমক লাগায় আধ-ভোলা সেই কান্নাহাসি।
২৬০
নীল আকাশের কোণে কোণে ওই বুঝি আজ শিহর লাগে আহা।
শাল-পিয়ালের বনে বনে কেমন যেন কাঁপন জাগে আহা।