হেরো ওই গেল বেলা, ভাঙিল মিলন মেলা—
গেল সবে ছাড়ি খেলা ঘরে যে যাহার।
হে ভিখারি, কারে তুমি শুনাইছ সুর—
রজনী আঁধার হল, পথ অতি দূর।
ক্ষুধিত তৃষিত প্রাণে আর কাজ নাহি গানে—
এখন বেসুর তানে বাজিছে সেতার।
১২
আমার নাইবা হল পারে যাওয়া।
যে হওয়াতে চলত তরী অঙ্গেতে সেই লাগাই হাওয়া।
নেই যদি বা জমল পাড়ি ঘাট আছে তো বসতে পারি।
আমার আশার তরী ডুবল যদি দেখব তোদের তরী-বাওয়া।
হাতের কাছে কোলের কাছে যা আছে সেই অনেক আছে।
আমার সারা দিনের এই কি রে কাজ— ওপার-পানে কেঁদে চাওয়া।
কম কিছু মোর থাকে হেথা পুরিয়ে নেব প্রাণ দিয়ে তা।
আমার সেইখানেতেই কল্পলতা যেখানে মোর দাবি-দাওয়া।
১৩
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,
আমি বাইব না মোর খেয়াতেরী এই ঘাটে,
চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,
মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনা দেনা,
বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে—
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে।
যখন জমবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়,
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়, আহা,
ফুলের বাগান ঘন ঘাসের পরবে সজ্জা বনবাসের,