যাবার আগে যাও গো আমায় জাগিয়ে দিয়ে,
রক্তে তোমার চরণ-দোলা লাগিয়ে দিয়ে।
আঁধার নিশার বক্ষে যেমন তারা জাগে,
পাষাণগুহার কক্ষে নিঝর-ধারা জাগে,
মেঘের বুকে যেমন মেঘের মন্দ্র জাগে,
বিশ্ব-নাচের কেন্দ্রে যেমন ছন্দ জাগে,
তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও যাবার পথে আগিয়ে দিয়ে,
কাঁদন-বাঁধন ভাগিয়ে দিয়ে।
১৭
আমার অন্ধপ্রদীপ শূন্য-পানে চেয়ে আছে,
সে যে লজ্জা জানায় ব্যর্থ রাতের তারার কাছে।
ললাটে তার পড়ুক লিখা
তোমার লিখন ওগো শিখা—
বিজয়টিকা দাও গো এঁকে এই সে যাচে।
হায় কাহার পথে বাহির হলে বিরহিণী!
তোমার আলোক-ঋণে করো তুমি আমায় ঋণী।
তোমার রাতে আমার রাতে
এক আলোকের সূত্রে গাঁথে
এমন ভাগ্য হায় গো আমার হারায় পাছে।
১৮
কেন যে মন ভোলে আমার মন জানে না।
তারে মানা করে কে, আমার মন মানে না।
কেউ বোঝে না তারে, সে যে বোঝে না আপ্নারে।
সবাই লজ্জা দিয়ে যায়, সে তো কানে আনে না।
তার খেয়া গেল পারে, সে যে রইল নদীর ধারে।
কাজ ক’রে সব সারা ওই এগিয়ে গেল কারা,
আন্মনা মন সে দিক-পানে দৃষ্টি হানে না।