এ শুধু আপনমনে মালা গেঁথে ছিঁড়ে ফেলা,
নিমেষের হাসিকান্না গান গেয়ে সমাপন।
শ্যামল পল্লবপাতে রবিকরে সারা বেলা
আপনারই ছায়া লয়ে খেলা করে ফুলগুলি—
এও সেই ছায়াখেলা বসন্তের সমীরণে।
কুহকের দেশে যেন সাধ ক’রে পথ ভুলি
হেথা হোথা ঘুরি ফিরি সারা দিন আনমনে।
কারে যেন দেব’ ব’লে কোথা যেন ফুল তুলি—
সন্ধ্যায় মলিন ফুল উড়ে যায় বনে বনে।
এ খেলা খেলিবে, হায়, খেলার সাথি কে আছে।
ভুলে ভুলে গান গাই— কে শোনে, কে নাই শোনে—
যদি কিছু মনে পড়ে, যদি কেহ আসে কাছে
৩০
যে আমি, ওই ভেসে চলে কালের ঢেউয়ে আকাশতলে
ওরই পানে দেখছি আমি চেয়ে।
ধুলার সাথে, জলের সাথে, ফুলের সাথে, ফলের সাথে,
সবার সাথে চলছে ও যে ধেয়ে।
ও যে সদাই বাইরে আছে, দুঃখে সুখে নিত্য নাচে—
ঢেউ দিয়ে যায়, দোলে যে ঢেউ খেয়ে।
একটু ক্ষয়ে ক্ষতি লাগে, একটু ঘাষে ক্ষত জাগে—
ওরই পানে দেখছি আমি চেয়ে।
যে আমি যায় কেঁদে হেসে তাল দিতেছে মৃদঙ্গে সে,
অন্য আমি উঠতেছি গান গেয়ে।
ও যে সচল ছবির মতো আমি নীরব কবির মতো—
ওরই পানে দেখছি আমি চেয়ে।
এই-যে আমি ওই আমি নই, আপন-মাঝে আপনি যে রই,
যাই নে ভেসে মরণধারা বেয়ে—