গতিরাগের সে ছিল গান, আলোছায়ার সে ছিল প্রাণ,
আকাশকে সে চমকে দিত বনে।
মেঘলা দিনের আকুলতা বাজিয়ে যেত পায়ে
তমাল ছায়ে-ছায়ে।
ফাল্গুনে সে পিয়ালতলায় কে জানিত কোথায় পলায়
দখিন হাওয়ার চঞ্চলতার সনে।
৫৮
তোমার হল শুরু, আমার হল সারা—
তোমায় আমায় মিলে এমনি বহে ধারা।
তোমার জ্বলে বাতি তোমার ঘরে সাথি—
আমার তরে রাতি, আমার তরে তারা।
তোমার আছে ডাঙা, আমার আছে জল—
তোমার বসে থাকা, আমার চলাচল।
তোমার হাতে রয়, আমার হাতে ক্ষয়—
তোমার মনে ভয়, আমার ভয় হারা।
৫৯
এমনি ক’রেই যায় যদি দিন যাক না।
মন উড়েছে উডুক-না রে মেলে দিয়ে গানের পাখ্না।
আজকে আমার প্রাণ ফোয়ারার সুর ছুটেছে,
দেহের বাঁধ টুটেছে—
মাথার ’পরে খুলে গেছে আকাশের ওই সুনীল ঢাক্না।
ধরণী আজ মেলেছে তার হৃদয়খানি,
সে যেন রে কাহার বাণী।
কঠিন মাটি মনকে আজি দেয় না বাধা।
সে কোন্ সুরে সাধা—
বিশ্ব বলে মনের কথা, কাজ প’ড়ে আজ থাকে থাক্-না।