দিন চলে যায়, আমি আনমনে তারি আশা চেয়ে থাকি বাতায়নে—
ওগো, প্রাণে মনে আমি যে তাহার পরশ পাবার প্রয়াসী।
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি—
মোর ডানা নাই, আছি এক ঠাঁই সে কথা যে যাই পাশরি।
আমি উন্মনা হে,
হে সুদূর, আমি উদাসী।
রৌদ্র-মাখানো অলস বেলায় তরুমর্মরে ছায়ার খেলায়
কী মুরতি তব নীল আকাশে নয়নে উঠে গো অভাসি।
হে সুদূর, আমি উদাসী।
ওগো সুদূর, বিপুল সুদূর, তুমি যে বাজাও ব্যাকুল বাঁশরি—
কক্ষে আমার রুদ্ধ দুয়ার সে কথা যে যাই পাশরি।
৬৬
ওরে সাবধানী পথিক, বারেক পথ ভুলে মরো ফিরে।
খোলা আঁখি-দুটো অন্ধ করে দে আকুল আঁখির নীরে।
সে ভোলা পথের প্রান্তে রয়েছে হারানো হিয়ার কুঞ্জ,
ঝ’রে প’ড়ে আছে কাঁটা-তরুতলে রক্তকুসুমপুঞ্জ—
সেথা দুই বেলা ভাঙা-গড়া-খেলা অকুলসিন্ধুতীরে।
অনেক দিনের সঞ্চয় তোর আগুলি আছিস বসে,
ঝড়ের রাতের ফুলের মতন ঝরুক পড়ুক খসে।
আয় রে এবার সব-হারাবার জয়মালা পরো শিরে।
৬৭
তরী আমার হঠাৎ ডুবে যায়
কোন্খানে রে কোন্ পাষাণের ঘায়।
নবীন তরী নতুন চলে, দিই নি পাড়ি অগাধ জলে—
বাহি তারে খেলার ছলে কিনার-কিনারায়।