ভেসেছিলেম স্রোতের ভয়ে, একা ছিলেম কর্ণ ধ’রে—
লেগেছিল পালের ’পরে মধুর মৃদু বায়।
সুখে ছিলেম আপন-মনে, মেঘ ছিল না গগনকোণে—
লাগবে তরী কুসুমবনে ছিলেম সেই আশায়।
৬৮
আমি কেবলই স্বপন করেছি বপন বাতাসে—
তাই আকাশকুসুম করিনু চয়ন হতাশে।
ছায়ার মতন মিলায় ধরণী, কুল নাহি পায় আশার তরণী,
মানসপ্রতিমা ভাসিয়া বেড়ায় আকাশে।
কিছু বাঁধা পড়িল না কেবলই বাসনা-বাঁধনে।
কেহ নাহি দিল ধরা শুধু এ সুদূর-সাধনে।
আপনার মনে বসিয়া একেলা অনলশিখায় কী করিনু খেলা,
দিনশেষে দেখি ছাই হল সব হুতাশে।
৬৯
শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা,
শুধু আলো-আঁধারে কাঁদা-হাসা।
শুধু দেখা পাওয়া, শুধু ছুঁয়ে যাওয়া,
শুধু দূরে যেতে যেতে কেঁদে চাওয়া,
শুধু নব দুরাশায় আগে চ’লে যায়—
পিছে ফেলে যায় মিছে আশা।
অশেষ বাসনা লয়ে ভাঙা বল,
প্রাণপণ কাজে পায় ভাঙা ফল,
ভাঙা তরী ধ’রে ভাসে পারাবারে,
ভাব কেঁদে মরে— ভাঙা ভাষা।
হৃদয়ে হৃদয়ে আধো পরিচয়,
আধখানি কথা সাঙ্গ নাহি হয়,