পাতা:গীতবিতান.djvu/৬৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিচিত্র
৫৭৫

৭২

দূর রজনীর স্বপন লাগে আজ নূতনের হাসিতে,
দূর ফাগুনের বেদন জাগে আজ ফাগুনের বাঁশিতে।
হায় রে সে কাল হায় রে  কখন চলে যায় রে
আজ এ কালের মরীচিকায়  নতুন মায়ায় ভাসিতে।
যে মহাকাল দিন ফুরালে  আমার কুসুম ঝরালো
সেই তোমারি তরুণ ভালে ফুলের মালা পরালো।
শুনিয়ে শেষের কথা সে কাঁদিয়ে ছিল হতাশে,
তোমার মাঝে নতুন সাজে শুন্য আবার ভরালো।
আমরা খেলা খেলেছিলেম,  আমরাও গান গেয়েছি।
আমরাও পাল মেলেছিলেম,  আমরা তরী বেয়েছি।
হারায় নি তা হারায় নি  বৈতরণী পারায় নি—
নবীন চোখের চপল আলোয় সে কাল ফিরে পেয়েছি।

৭৩

ওরে মাঝি, ওরে আমার মানবজন্মতরীর মাঝি,
শুনতে কি পাস দূরের থেকে পারের বাঁশি উঠছে বাজি।
তরী কি তোর দিনের শেষে  ঠেকবে এবার ঘাটে এসে।
সেথায় সন্ধ্যা-অন্ধকারে দেয় কি দেখা প্রদীপরাজি।
যেন আমার লাগে মনে  মন্দ-মধুর এই পবনে
সিন্ধুপারের হাসিটি কার আঁধার বেয়ে আসছে আজি।
আসার বেলায় কুসুমগুলি  কিছু এনেছিলেম তুলি,
যেগুলি তার নবীন আছে এই বেলা নে সাজিয়ে সাজি।

৭৪

চোখ যে ওদের ছুটে চলে গো-
ধনের বাটে, মানের বাটে, রূপের হাটে,  দলে দলে গো।