ও কি তার উত্তরীয় অশোকশাখায় উঠল দুলি।
আজি কি পলাশবনে ওই সে বুলায় রঙের তুলি।
ওকি তার চরণ পড়ে তালে তালে মল্লিকার ওই ভঙ্গীতে।
না গো না, দেয় নি ধরা, হাসির ভরা দীর্ঘশ্বাসে যায় ভেসে।
মিছে এই হেলা-দোলায় মনকে ভোলায়, ঢেউ দিয়ে যায় স্বপ্নে সে।
সে বুঝি লুকিয়ে আসে বিচ্ছেদেরই রিক্ত রাতে,
নয়নের আড়ালে তার নিত্য-জাগার আসন পাতে—
ধেয়ানের বর্ণছটায় ব্যথার রঙে মনকে সে রয় রঙ্গিতে।
৮৪
ও কি এল, ও কি এল না, বোঝা গেল না—
ও কি মায়া কি স্বপনছায়া, ও কি ছলনা।
ধরা কি পড়ে ও রূপেরই ডোরে,
গানেরই তানে কি বাঁধিবে ওরে—
ও যে চিরবিরহেরই সাধনা।
ওর বাঁশিতে করুণ কী সুর লাগে
বিরহমিলনমিলিত রাগে।
সুখে কি দুখে ও পাওয়া না-পাওয়া,
হৃদয়বনে ও উদাসী হাওয়া,
বুঝি শুধু ও পরমকামনা।
৮৫
দূরদেশী সেই রাখাল ছেলে
আমার বাটে বটের ছায়ায় সারা বেলা গেল খেলে।
গাইল কী গান সেই তা জানে, সুর বাজে তার আমার প্রাণে—
বলো দেখি তোমরা কি তার কথার কিছু আভাস পেলে।
আমি তারে শুধাই যবে ‘কী তোমারে দিব আনি’—
সে শুধু কয়, ‘আর কিছু নয়, তোমার গলার মালাখানি।’