দিই যদি তো কী দাম দেবে যায় বেলা সেই ভাব্না ভেবে—
ফিরে এসে দেখি ধুলায় বাঁশিটি তার গেছে ফেলে।
৮৬
বাজে গুরুগুরু শঙ্কার ডঙ্কা,
ঝঞ্ঝা ঘনায় দূরে ভীষণ নীরবে।
কত রব সুখস্বপ্নের ঘোরে আপনা ভুলে—
সহসা জাগিতে হবে।
৮৭
ও জোনাকী, কী সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছ।
আঁধার সাঁঝে বনের মাঝে উল্লাসে প্রাণ ঢেলেছ।
তুমি নও তো সূর্য, নও তো চন্দ্র, তোমার তাই ব’লে কি কম আনন্দ।
তুমি আপন জীবন পূর্ণ করে আপন আলো জ্বেলেছ।
তোমার যা আছে তা তোমার আছে, তুমি নও গো ঋণী কারো কাছে,
তোমার অন্তরে যে শক্তি আছে তারি আদেশ পেলেছ।
তুমি আঁধার-বাঁধন ছাড়িয়ে ওঠ, তুমি ছোটো হয়ে নও গো ছোটো,
জগতে যেথায় যত আলো সবায় আপন ক’রে ফেলেছ।
৮৮
হ্যাদে গো নন্দরানী, আমাদের শ্যামকে ছেড়ে দাও।
আমরা রাখাল-বালক দাঁড়িয়ে দ্বারে। আমাদের শ্যামকে দিয়ে যাও।
হেরো গো প্রভাত হল, সুয্যি ওঠে, ফুল ফুটেছে বনে।
আমরা শ্যামকে নিয়ে গোষ্ঠে যাব আজ করেছি মনে।
ওগো, পীত ধড়া পরিয়ে তারে কোলে নিয়ে আয়।
তার হাতে দিয়ে মোহন বেণু, নূপুর দিয়ো পায়।
রোদের বেলায় গাছের তলায় নাচব মোরা সবাই মিলে।
বাজবে নূপুর রুনুঝুনু, বাজবে বাঁশি মধুর বোলে।
বনফুলে গাঁথব মালা, পরিয়ে দেব’ শ্যামের গলে।