৮৯
আঁধারের লীলা আকাশে আলোকলেখায়-লেখায়,
ছন্দের লীলা অচলকঠিনমৃদঙ্গে।
অরূপের লীলা অগোনা রূপের রেখায় রেখায়,
স্তব্ধ অতল খেলায় তরলতরঙ্গে।
আপনারে পাওয়া আপনা-ত্যাগের গভীর লীলায়,
মূর্তির লীলা মূর্তিবিহীন কঠোর শিলায়,
শান্ত শিবের লীলা যে প্রলয়ভ্রূভঙ্গে।
শৈলের লীলা নির্ঝরকলকলিত রোলে,
শুভ্রের লীলা কত-না রঙ্গে বিরঙ্গে।
মাটির লীলা যে শস্যের বায়ুহেলিত দোলে,
আকাশের লীলা উধাও ভাষার বিহঙ্গে।
স্বর্গের খেলা মর্তের ম্লান ধুলায় হেলায়,
দুঃখেরে লয়ে আনন্দ খেলে দোলন-খেলায়,
শৌর্যের খেলা ভীরু মাধুরীর আসঙ্গে।
৯০
দেখা না-দেখায় মেশা হে বিদ্যুৎলতা,
কাঁপাও ঝড়ের বুকে একি ব্যাকুলতা।
গগনে সে ঘুরে ঘুরে খোঁজে কাছে, খোঁজে দূরে—
সহসা কী হাসি হাস’, নাহি কহ কথা।
আঁধার ঘনায় শূন্যে, নাহি জানে নাম,
কী রুদ্র সন্ধানে সিন্ধু দুলিছে দুর্দাম।
অরণ্য হতাশপ্রাণে আকাশে ললাট হানে,
দিকে দিকে কেঁদে ফেরে কী দুঃসহ ব্যথা।
৯১
তুমি উষার সোনার বিন্দু প্রাণের সিন্ধুকূলে,
শরৎ-প্রাতের প্রথম শিশির প্রথম শিউলিফুলে।