আঁখি নত করি একেলা গাঁথিছ ফুল, মুকুর লইয়া যতনে বাঁধিছ চুল।
গোপন হৃদয়ে আপনি করিছ খেলা—
কী কথা ভাবিছ, কেমনে কাটিছে বেলা।
আমরা বৃহৎ অবোধ ঝড়ের মতো আপন আবেগে ছুটিয়া চলিয়া আসি,
বিপুল আঁধারে অসীম আকাশ ছেয়ে টুটিবারে চাহি আপন হৃদয়রাশি।
তোমরা বিজুলি হাসিতে হাসিতে চাও, আঁধার ছেদিয়া মরম বিধিয়া দাও—
গগনের গায়ে আগুনের রেখা আঁকি চকিত চরণে চলে যাও দিয়ে ফাঁকি।
অযতনে বিধি গড়েছে মোদের দেহ, নয়ন অধর দেয় নি ভাষায় ভরে—
মোহনমধুর মন্ত্র জানি নে মোরা, আপনা প্রকাশ করিব কেমন ক’রে।
তোমরা কোথায় আমরা কোথায় আছি,
কোনো সুলগনে হব না কি কাছাকাছি—
তোমরা হাসিয়া বহিয়া চলিয়া যাবে, আমরা দাঁড়ায়ে রহিব এমনি ভাবে।
১৩২
ওগো পুরবাসী,
আমি দ্বারে দাঁড়ায়ে আছি উপবাসী।
হেরিতেছি সুখমেলা, ঘরে ঘরে কত খেলা,
শুনিতেছি সারা বেলা সুমধুর বাঁশি।
চাহি না অনেক ধন, রব না অধিক ক্ষণ,
যেথা হতে আসিয়াছি সেথা যাব ভাসি।
তোমরা আনন্দে রবে নব নব উৎসবে,
কিছু মান নাহি হবে গৃহভরা হাসি।
১৩৩
আমার যাবার সময় হল, আমায় কেন রাখিস ধরে।
চোখের জলের বাঁধন দিয়ে বাধিস নে আর মায়াডোরে।
ফুরিয়েছে জীবনের ছুটি, ফিরিয়ে নে তোর নয়ন দুটি—
নাম ধরে আর ডাকিস নে ভাই, যেতে হবে ত্বরা করে।