স্বপনসম মিলাবে যদি কেন গো দিলে চেতনা—
চকিতে শুধু দেখা দিয়ে চির মরমবেদনা!
তোমারে চাহি ফিরিছে হেরো কাননে কাননে ওই।
বনদেবীগণের প্রস্থান
বাল্মীকির প্রবেশ
সরস্বতীর আবির্ভাব
বাল্মীকি। এই-যে হেরি গো দেবী আমারি!
সব কবিতাময় জগত-চরাচর, সব শোভাময় নেহারি।
ছন্দে উঠিছে চন্দ্রমা, ছন্দে কনকরবি উদিছে,
ছন্দে জগমণ্ডল চলিছে, জ্বলন্ত কবিতা তারকা সবে।
এ কবিতার মাঝারে তুমি কে গো দেবী,
আলোকে আলো আঁধারি।
আজি মলয় আকুল বনে বনে একি গীত গাহিছে;
ফুল কহিছে প্রাণের কাহিনী, নব রাগরাগিণী উছাসিছে—
এ আনন্দে আজ গীত গাহে মোর হৃদয় সব অবারি।
তুমিই কি দেবী ভারতী! কৃপাগুণে অন্ধ আঁখি ফুটালে—
উষা আনিলে প্রাণের আঁধারে,
প্রকৃতির রাগিণী শিখাইলে।
তুমি ধন্য গো! রব চিরকাল চরণ ধরি তোমারি।
সরস্বতী। দীনহীন বালিকার সাজে এসেছিনু এ ঘোর বনমাঝে
গলাতে পাষাণ তোর মন—
কেন, বৎস, শোন্ তাহা শোন্!
আমি বীণাপাণি তোরে এসেছি শিখাতে গান—
তোর গানে গলে যাবে সহস্র পাষাণপ্রাণ।
যে রাগিণী শুনে তোর গলেছে কঠোর মন
সে রাগিণী তোরি কণ্ঠে বাজিবে রে অনুক্ষণ।
অধীর হইয়া সিন্ধু কাঁদিবে চরণতলে,
চারি দিকে দিক্বধূ আকুল নয়নজলে।