যে আমারি জেনেছে নাম
ওগো তারি নামখানি মোর হৃদয়ে থাক্।
আমি তারি বিচ্ছেদদহনে
তপ করি চিত্তের গহনে।
দুঃখের পাবকে হয়ে যায় শুদ্ধ
অন্তরে মলিন যাহা আছে রুদ্ধ—
অপমাননাগিনীর খুলে যায় পাক।
মা। কিসের ডাক তোর কিসের ডাক।
কোন্ পাতালবাসী অপদেবতার ইশারা
তোকে ভুলিয়ে নিয়ে যাবে—
আমি মন্ত্র প’ড়ে কাটাব তার মায়া।
প্রকৃতি। আমার মনের মধ্যে বাজিয়ে দিয়ে গেছে—
জল দাও, জল দাও, জল দাও।
মা। পোড়া কপাল আমার!
কে বলেছে তোকে ‘জল দাও’!
সে কি তোর আপন জাতের কেউ।
প্রকৃতি। হাঁ গো মা, সেই কথাই তো ব’লে গেলেন তিনি,
তিনি আমার আপন জাতের লোক।
আমি চণ্ডালী— সে যে মিথ্যা, সে যে মিথ্যা,
সে যে দারুণ মিথ্যা।
শ্রাবণের কালো যে মেঘ
তারে যদি নাম দাও ‘চণ্ডাল’
তা ব’লে কি জাত ঘুচিবে তার,
অশুচি হবে কি তার জল।
তিনি ব’লে গেলেন আমায়—
নিজেরে নিন্দা কোরো না,
মানবের বংশ তোমার,
মানবের রক্ত তোমার নাড়ীতে।
পাতা:গীতবিতান.djvu/৮৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চণ্ডালিকা
৭১৭