সহচরী। নীরবে থাকিস সখী, ও তুই নীরবে থাকিস
তোর প্রেমেতে আছে যে কাঁটা
তারে আপন বুকে বিঁধিয়ে রাখিস।
দয়িতেরে দিয়েছিলি সুধা,
আজিও তাহার মেটে নি ক্ষুধা—
এখনি তাহে মিশাবি কি বিষ।
যে জ্বলনে তুই মরিবি মরমে মরমে
কেন তারে বাহিরে ডাকিস।
বজ্রসেন। কী করিয়া সাধিলে অসাধ্য ব্রত কহো বিবরিয়া।
জানি যদি, প্রিয়ে, শোধ দিব এ জীবন দিয়ে
এই মোর পণ।
শ্যামা। তোমা লাগি যা করেছি কঠিন সে কাজ,
আরো সুকঠিন আজ তোমারে সে কথা বলা।
বালক কিশোর উত্তীয় তার নাম,
ব্যর্থ প্রেমে মোর মত্ত অধীর—
মোর অনুনয়ে তব চুরি-অপবাদ নিজ-’পরে লয়ে
সঁপেছে আপন প্রাণ।
বজ্রসেন। কাঁদিতে হবে রে, রে পাপিষ্ঠা, জীবনে পাবি না শান্তি।
ভাঙিবে—ভাঙিবে কলুষনীড় বজ্র-আঘাতে।
শ্যামা। হে, ক্ষমা করো নাথ, ক্ষমা করো।
এ পাপের যে অভিসম্পাত
হোক বিধাতার হাতে নিদারুণতর।
তুমি ক্ষমা করো, তুমি ক্ষমা করো, তুমি ক্ষমা করো।
বজ্রসেন। এ জন্মের লাগি
তোর পাপমূল্যে কেনা মহাপাপভাগী
এ জীবন করিলি ধিক্কৃত!
কলঙ্কিনী, ধিক্ নিশ্বাস মোর তোর কাছে ঋণী
কলঙ্কিনী।
পাতা:গীতবিতান.djvu/৮৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্যামা
৭৪৭