১১০
জয় জয় জয় হে জয় জ্যোতির্ময়—
মোহকলুষঘন কর’ ক্ষয়, কর’ ক্ষয়।
অগ্নিপরশ তব কর’ কর’ দান,
কর’ নির্মল মম তনুমন প্রাণ—
বন্ধনশৃঙ্খল নাহি সয়, নাহি সয়।
গূঢ় বিঘ্ন যত কর’ উৎপাটিত।
অমৃতদ্বার তব কর’ উদ্ঘাটিত।
যাচি যাত্রিদল, হে কর্ণধার,
সুপ্তিসাগর কর’ কর’ পার—
স্বপ্নের সঞ্চয় হোক লয়, হোক লয়।
১১১
বাজো রে বাঁশরি, বাজো।
সুন্দরী, চন্দনমাল্যে মঙ্গলসন্ধ্যায় সাজো।
বুঝি মধুফাল্গুনমাসে চঞ্চল পান্থ সে আসে—
মধুকরপদভরকম্পিত চম্পক অঙ্গনে ফোটে নি কি আজও।
রক্তিম অংশুক মাথে, কিংশুককঙ্কণ হাতে,
মঞ্জীরঝঙ্কৃত পায়ে সৌরভমন্থর বায়ে
বন্দনসঙ্গীতগুঞ্জনমুখরিত নন্দনকুঞ্জে বিরাজো।
১১২
তোমায় সাজাব যতনে কুসুমে রতনে
কেয়ুরে কঙ্কণে কুঙ্কুমে চন্দনে।
কুন্তলে বেষ্টিব স্বর্ণজালিকা, কণ্ঠে দোলাইব মুক্তামালিকা,
সীমন্তে সিন্দুর অরুণ বিন্দুর— চরণ রঞ্জিব অলক্ত-অঙ্কনে।
সখীরে সাজাব সখার প্রেমে অলক্ষ্য প্রাণের অমূল্য হেমে।
সাজাব সকরুণ বিরহবেদনায়, সাজাব অক্ষয় মিলনসাধনায়—
মধুর লজ্জা রচিব সজ্জা যুগল প্রাণের বাণীর বন্ধনে।