রাজা তুমি নহ, হে মহাতাপস, তুমিই প্রাণের প্রিয়।
ভিক্ষাভূষণ ফেলিয়া পরিব তোমারি উত্তরীয়।
দৈন্যের মাঝে আছে তব ধন, মৌনের মাঝে রয়েছে গোপন
তোমার মন্ত্র অগ্নিবচন– তাই আমাদের দিয়ো।
পরের সজ্জা ফেলিয়া পরিব তোমারি উত্তরীয়।
দাও আমাদের অভয়মন্ত্র, অশোকমন্ত্র তব।
দাও আমাদের অমৃতমন্ত্র, দাও গো জীবন নব।
যে জীবন ছিল তব তপোবনে, যে জীবন ছিল তব রাজাসনে,
মুক্ত দীপ্ত সে মহাজীবনে চিত্ত ভরিয়া লব।
মৃত্যুতরণ শঙ্কাহরণ দাও সে মন্ত্র তব।
১৪
নব বৎসরে করিলাম পণ লব স্বদেশের দীক্ষা—
তব আশ্রমে তোমার চরণে, হে ভারত, লব শিক্ষা।
পরের ভূষণ, পরের বসন, তেয়াগিব আজ পরের অশন—
যদি হই দীন না হইব হীন, ছাড়িব পরের ভিক্ষা।
নব বৎসরে করিলাম পণ লব স্বদেশের দীক্ষা।
থাকে প্রাসাদ আছে তো কুটির কল্যাণে সুপবিত্র।
থাকে নগর আছে তব বন ফলে ফুলে সুবিচিত্র।
তোমা হতে যত দূরে গেছি স’রে তোমারে দেখেছি তত ছোটো ক’রে।
কাছে দেখি আজ, হে হৃদয়রাজ, তুমি পুরাতন মিত্র।
হে তাপস, তব পর্ণকুটির কল্যাণে সুপবিত্র।
পরের বাক্যে তব পর হয়ে দিয়েছি পেয়েছি লজ্জা।
তোমারে ভুলিতে ফিবায়েছি মুখ, পরেছি পরের সজ্জা।
কিছু নাহি গণি’ কিছু নাহি কহি’ জপিছ মন্ত্র অন্তরে বহি—
তব সনাতন ধ্যানের আসন মোদের অস্থিমজ্জা।
পরের বুলিতে তোমারে ভুলিতে দিয়েছি পেয়েছি লজ্জা।