চন্দ্র কহিতেছে গান গেয়ে, ‘হাসো প্রভু, মোর পানে চেয়ে,
জ্যোৎস্নাসুধা বিতরিব স্বামী।’
মেঘ গাহে চরণে তাঁহার ‘দেহো, প্রভু, করুণা তোমার,
ছায়া দিব, দিব বৃষ্টিজল।’
বসন্ত গাহিছে অনুক্ষণ, ‘কহো তুমি আশ্বাসবচন,
শুষ্ক শাখে দিব ফুল ফল।’
করজোড়ে কহে নরনারী, ‘হৃদয়ে দেহো গো প্রেমবারি,
জগতে বিলাব ভালোবাসা।’
‘পূরাও পূরাও মনস্কাম’ কাহারে ডাকিছে অবিশ্রাম
জগতের ভাষাহীন ভাষা।
১৮
সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।
কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।
ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।
যা-কিছু পায় হারায়ে যায়, না মানে সান্ত্বনা।
সুখ-আশে দিশে দিশে বেড়ায় কাতরে—
মরীচিকা ধরিতে চায় এ মরুপ্রান্তরে।
ফুরায় বেলা, ফুরায় খেলা, সন্ধ্যা হয়ে আসে—
কাঁদে তখন আকুল-মন, কাঁপে তরাসে।
কী হবে গতি, বিশ্বপতি, শান্তি কোথা আছে—
তোমারে দাও, আশা পূরাও, তুমি এসো কাছে।
১৯
রজনী পোহাইল— চলেছে যাত্রীদল,
আকাশ পূরিল কলরবে।
সবাই যেতেছে মহোৎসবে।
কুসুম ফুটেছে বনে, গাহিছে পাখিগণে—
এমন প্রভাত কি আর হবে।