৪৮
তোমারে জানি নে হে, তবু মন তোমাতে ধায়।
তোমারে না জেনে বিশ্ব তবু তোমাতে বিরাম পায়।
অসীম সৌন্দর্য তব কে করেছে অনুভব হে,
সে মাধুরী চিরনব—
আমি না জেনে প্রাণ সঁপেছি তোমায়।
তুমি জ্যোতির জ্যোতি, আমি অন্ধ আঁধারে।
তুমি মুক্ত মহীয়ান, আমি মগ্ন পাথারে।
তুমি অন্তহীন, আমি ক্ষুদ্র দীন— কী অপূর্ব মিলন তোমায় আমায়।
৪৯
এবার বুঝেছি সখা, এ খেলা কেবলই খেলা—
মানবজীবন লয়ে এ কেবলই অবহেলা।
তোমারে নহিলে আর ঘুচিবে না হাহাকার—
কী দিয়ে ভুলায়ে রাখো, কী দিয়ে কাটাও বেলা।
বৃথা হাসে রবিশশী, বৃথা আসে দিবানিশি—
সহসা পরান কাঁদে শূন্য হেরি দিশি দিশি।
তোমারে খুঁজিতে এসে কী লয়ে রয়েছি শেষে—
ফিরি গো কিসের লাগি এ অসীম মহামেলা।
৫০
চাহি না সুখে থাকিতে হে, হেরো কত দীনজন কাঁদিছে।
কত শোকের ক্রন্দন গগনে উঠিছে, জীবনবন্ধন নিমেষে টুটিছে,
কত ধূলিশায়ী জন মলিন জীবন শরমে চাহে ঢাকিতে হে।
শোকে হাহাকারে বধির শ্রবণ, শুনিতে না পাই তোমার বচন,
হৃদয়বেদন করিতে মোচন কারে ডাকি কারে ডাকিতে হে।
আশার অমৃত ঢালি দাও প্রাণে, আশীর্বাদ করো আতুর সন্তানে—
পথহারা জনে ডাকি গৃহপানে চরণে হবে রাখিতে হে।