নাথ, তুমি একবার এসো হাসিমুখে,
এরা ম্লান হয়ে যাক তোমার সম্মুখে
(লাজে ম্লান হোক হে।
আমারে যারা ভুলায়েছিল লাজে ম্লান হোক হে।
তোমারে যারা ঢেকেছিল লাজে ম্লান হোক হে।)
কোথা তব প্রেমমুখ, বিশ্ব-ঘেরা হাসি—
আমারে তোমার মাঝে করো গো উদাসী।
(উদাস করো হে, তোমার প্রেমে—
তোমার মধুর রূপে উদাস করো হে।)
ক্ষুদ্র আমি করিতেছে বড়ো অহঙ্কার—
ভাঙো ভাঙা ভাঙো, নাথ, অভিমান তার।
(অভিমান চূর্ণ করো হে।
তোমার পদতলে মান চূর্ণ করো হে—
পদানত ক’রে মান চুর্ণ করো হে।)
৬৭
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে। (নয়নের নয়ন!)
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে। (হৃদয়বিহারী!)
বাসনার বশে মন অবিরত ধায় দশ দিশে পাগলের মতো,
স্থির-আঁখি তুমি মরমে সতত জাগিছ শয়নে স্বপনে।
(তোমার বিরাম নাই, তুমি অবিরাম জাগিছ শয়নে স্বপনে।
তোমার নিমেষ নাই, তুমি অনিমেষ জাগিছ শয়নে স্বপনে।)
সবাই ছেড়েছে, নাই যার কেহ, তুমি আছ তার, আছে তব স্নেহ—
নিরাশ্রয় জন পথ যার গেহ সেও আছে তব ভবনে।
(যে পথের ভিখারি সেও আছে তব ভবনে।
যার কেহ কোথাও নেই সেও আছে তব ভবনে।)
তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর, সমুখে অনন্ত জীবনবিস্তার—
কালপারাবার করিতেছ পার কেহ নাহি জানে কেমনে।