পাতা:গীতবিতান.djvu/৯৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৫৬
পুজা ও প্রার্থনা

কেমন ক’রে নামবে বোঝা,  তোমার আপদ নয় যে সোজা—
অন্তরেতে আছে যখন ভয়ের ভীষণ ভারখানা।

রাতের আঁধার ঘোচে বটে বাতির আলো যেই জ্বালো,
মূৰ্ছাতে যে আঁধার ঘটে রাতের চেয়ে ঘোর কালো।
ঝড়-তুফানে ঢেউয়ের মারে  তবু তরী বাঁচতে পারে,
সবার বড়ো মার যে তোমার ছিদ্রটার ওই মারখানা।

পর তো আছে লাখে লাখে, কে তাড়াবে নিঃশেষে।
ঘরের মধ্যে পর যে থাকে পর করে দেয় বিশ্বে সে।
কারাগারের দ্বারী গেলে  তখনি কি মুক্তি মেলে।
আপনি তুমি ভিতর থেকে চেপে আছ দ্বারখানা।

শূন্য ঝুলির নিয়ে দাবি রাগ ক’রে রোস্ কার ’পরে।
দিতে জানিস তবেই পাবি, পাবি নে তো ধার ক’রে।
লোভে ক্ষোভে উঠিস মাতি,  ফল পেতে চাস রাতারাতি—
আপন মুঠো করলে ফুটো আপন খাঁড়ার ধারখানা।

৭৭

খেলার সাথি, বিদায়দ্বার খোলো—
এবার বিদায় দাও।
গেল যে খেলার বেলা।
ডাকিল পথিকে  দিকে বিদিকে,
ভাঙিল রে সুখমেলা।

৭৮

যাওয়া-আসারই এই কি খেলা
খেলিলে, হে হৃদিরাজা, সারা বেলা।
ডুবে যায় হাসি আঁখিজলে—
বহু যতনে যারে সাজালে
তারে হেলা।