পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

হইবে। বুড়া হাসিয়া উত্তর করিল, “তাহার জন্য আর চিন্তা কি বাবু? আমি কালই ছিপ্‌ ঠিক্‌ করিয়া আসিব।”

 যুবক। আজ গেলে হোত না?

 বৃদ্ধ। না বাবু, আজকের দিনটা মাপ করুন, কাল সকালে আপনার বাড়ী দুই মণ মাছ দিতে হইবে। মাছ কম হইলে কর্ত্তাবাবু পিঠের চামড়া রাখিবেন না।

 যুবক। তবে তুমি কালই যেও।

 বৃদ্ধ। ছোট বাবু, যদি এতদিন বাদে এলেন তো আমার ভিটেয় একবার পায়ের ধূলা দেবেন না?

 যুবক ফিরিতেছিল, বৃদ্ধের অনুরোধে তাহার বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিল। বুড়া বাহির হইতে ডাকিয়া বলিল, “বিজয়া, ছোটবাবু আসিয়াছেন একখানা চৌকি বাহির করিয়া দে।” বিজয়া শুইয়াছিল। পিতার কথা শুনিয়া তাড়াতাড়ি উঠিয়া ঘরের ভিতর গেল। একখান ছোট জলচৌকি বাহির করিয়া উঠানে রাখিল এবং ভূমিষ্ঠ হইয়া যুবককে প্রণাম করিল। যুবক বসিল, জয়চাঁদও বসিল। এমন সময় বাহির হইতে বামাকণ্ঠস্বরে কে বলিয়া উঠিল,—“কিশোরী, অন্ধকারে কোথা গেলে বাবা। আমাদের যে জোঁকে খেয়ে ফেল্লে।” কিশোরী হাসিয়া উঠিল, বলিল,—“জয়চাঁদ, আমি আজ আসি। আমার বন্ধুরা সব কলিকাতার লোক তাহারা বেশিক্ষণ ইছামতির ধারে বেড়াইলে মরিয়া যাইবে। বুড়া হাসিয়া বলিল,—“আহা, বাবুরা সুখী মানুষ, কষ্ট করা তো অভ্যাস নাই। তাঁরাও একটু বসুন না কেন? বিজয়া, আরও দুইখানা চৌকি বাহির করিয়া দে।” কিশোরী তখন বাড়ীর দুয়ারে দাঁড়াইয়া চীৎকার করিয়া

১০০