পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পথ-হারা।



 নদীর জল কমিয়া আসিয়াছে, জল সরিয়া গিয়া কাদা বাহির হইয়াছে, এই সময়ে পল্লীগ্রামে নদীতে স্নান করিবার বড়ই অসুবিধা। শুধু স্নান করিবার কেন, সকল বিষয়েরই অসুবিধা। হেমন্তের শেষে শীতের প্রারম্ভে বর্ষার জল বন্ধ হইয়া নানাবিধ সংক্রামক ব্যাধির সৃষ্টি করিতে থাকে। রোগক্লিষ্ট কৃষক শুামল শস্য ক্ষেত্রে পক্ক ধান্তের দিকে চাহিয়া আশায় বুক বাঁধিয়া, আশায় দিনযাপন করে। যাহারা নদীতীরে বাস করে, তাহাদিগের এ সময়ে জলের বড়ই কষ্ট। নদীতে জল থাকিলে তাহা আনা কষ্টসাধ্য। নদীতীর তরল কর্দ্দমে পরিণত হয়, সেইজন্য গ্রামের লোকে বাঁধা ঘাট না থাকিলে কাদার উপরে কাঠ ফেলিয়া বা ইট ফেলিয়া পথ করিয়া দেয়।

 সন্ধ্যার প্রাক্কালে একটি কিশোরী অতি সন্তর্পণে জলে নামিতেছিল। ভাগীরথীর তীরে একটি পুরাতন বাঁধা ঘাট, যে কালে ভাগীরথীর রূপ যৌবনগর্ব্ব ছিল ঘাটটিও সেই কালের। কালের প্রভাবে জীর্ণ শীর্ণ নদী ঘাট হইতে সরিয়া গিয়াছে, ঘাটের নিম্নের সোপানগুলি মৃত্তিকায় আচ্ছন্ন হইয়া গিয়াছে, কেবল বর্ষার সময়ে ঘাটে জল আসিয়া থাকে। কিশোরী সোপান কয়টি অতিক্রম করিয়া কর্দ্দমের উপর দিয়া চলিয়াছে। চারি পাঁচখানি গ্রামের লোক একত্র হইয়া পথ বাঁধিয়া দিয়াছে, বড় বড় তাল গাছের উপরে কাঠ বাঁধিয়া পথ প্রস্তুত হইয়াছে, কিন্তু লোকের

১১৪