গুচ্ছ।
প্রদীপ পড়িয়া গেল। বালক হাসিতে হাসিতে কাঠের উপর দিয়া ছুটিয়া আসিল, বলিল “দেখলি সুরি, আমি তখনই তোকে বলেছিলুম, থালাখানা আমায় দে, আমি পৌঁছে দিই, তা আমার কথা শুনলি নি, এখন কি করবি কর”। বালিকা হাসিয়া বলিল “কি আর করব বাড়ী ফিরে যাই, আবার গিয়ে নিয়ে আসি, মা অনেক প্রদীপ গড়িয়ে রেখেছেন”। বালিকা ধীরে ধীরে ধীরে ঘাটের উপর উঠিল, বালকও ফিরিল। বালিকা গৃহে ফিরিবার উদ্যোগ করিতেছে দেখিয়া বালক বলিল “সুরি, তুই তবে বাড়ী চল্লি? আমি এই খানে বসে থাকি। তোর সঙ্গে এক সঙ্গে বাড়ী যাব।”
বালিকা ঘাটের উপরে উঠিয়া চমকিয়া উঠিল, তাহার সম্মুখ দিয়া একটি শৃগাল দৌড়িয়া চলিয়া গেল, বালিকা সভয়ে চীৎকার করিয়া ডাকিল “মণি, ও মণি, শিগ্গির আয়না ভাই!” বালক তখন ঘাটের রাণার উপর বসিয়া এক মনে আমসত্ব ভক্ষণ করিতেছিল, সে অন্যমনস্ক হইয়া উত্তর দিল “কেন”? বালিকা তাহাকে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া আরও চীৎকার করিয়া ডাকিল, “মণি, শিগ্গির আয়।” বালক আমসত্ব ফেলিয়া এক লম্ফে বালিকার নিকট উপস্থিত হইল এবং ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল “কি? কি হয়েছে?” বালিকা তখনও ভয়ে কাঁপিতেছিল, সে ধীরে ধীরে বলিল “ভাই, একটা শিয়াল, তুই আমাকে বাড়ী পৌঁছে দিয়ে আয়”। বালক খুব একচোট হাসিয়া লইল, তাহার পর বলিল “চল্ যাচ্ছি।”
দেখিতে দেখিতে পূর্ব্বদিক তমসাচ্ছন্ন হইয়া আসিল, গঙ্গাবক্ষ হইতে বাস্পপুঞ্জ উখিত হইয়া তীরে কুয়াসার সহিত মিশিতে লাগিল,