পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পথ-হারা।

 সুরমা দাঁড়াইল, তাহার দাসী তখনও পশ্চাতে পড়িয়াছিল, তাহার জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিল। সেই পুরুষটি তাহার দিকে চাহিয়া দেখিল, দেখিয়াই ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া আসিল। তাহাকে দেখিয়া সুরমা ঘোমটা টানিয়া ভয়ে ও লজ্জায় জড়সড় হইয়া একপাশে দাঁড়াইল, যুবক তাহা দেখিয়া অগ্রস্তুত হইয়া ডাকিল “সুরমা!“সুরমা মুখ তুলিয়। চাহিয়া দেখিল, সে মণিলাল। মণিলাল তাহাকে নিরুত্তর দেখিয়া বলিল “সুরমা আমায় চিনিতে পারিলে না?” সুরমা তখন একটা প্রণাম করিয়া বলিল “হ্যাঁ পেরেছি, আপনি মণিদা!” উত্তর শুনিয়া যুবকের মুখ লাল হইয়া উঠিল। উভয়ে অরক্ষণ নীরবে দাঁড়াইয়া রহিল, তাহার পর মণিলাল কহিল “সুরমা, তুমি দৌলতপুর ছেড়ে যাবে শুনে একবার দেখিতে এলাম।” সুরমা কোন উত্তর দিল না, অধোমুখে দাঁড়াইয়া রহিল। মণিলাল আবার বলিল “সুরমা তবে এখন আসি।” সুরমা কি বলিতে বাইতেছিল, তাহা আর বলা হইল না, মণিলাল ঘাট ছাড়িয়া চলিয়া গেল।

 কলিকাতায় জগন্নাথ ঘাটে আজ লোকের বড় ভিড়, কারণ আজ বারুণী। পল্লীগ্রাম হইতে দলে দলে লোক গঙ্গাস্নান করিতে আসিয়াছে, গঙ্গার ধারের পথে লোক আর ধরিতেছে না, তাহার ভিতরে সারি সারি গাড়ী আসিতেছে। একখানি বড় ল্যাণ্ডো গাড়ী ঘাটে আসিয়া দাঁড়াইল, তাহা হইতে তিনটি পুরুষ ও দুইটি স্ত্রীলোক নামিল, একজন চাকর তাহাদিগের কাপড় গামছা ইত্যাদি নামাইয়া লইল। স্ত্রীলোক দুইটি অবগুণ্ঠনহীনা, দেখিলে ভদ্রঘরের স্ত্রী বলিয়া বোধ হয় না, তাহারা ঘাটের

১২৩