পথ-হারা।
করিলে, তাঁহাদিগের মধ্যে একজন বলিল “বাবুর নাম মণিলাল মিত্র।” নাম শুনিয়া রমণীর পূজায় বাধা পড়িল, তিনি ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন “কি বলিলে বাছা, কি নাম বলিলে?”
“বাবুর নাম মণিলাল মিত্র।”
“তাহার বাড়ী কি দৌলতপুরে?”
“তিনি দৌলতপুরের জমিদার।”
রমণীদ্বয় ‘বাবুর’ ঐশ্বর্য্য-গৌরবের পরিচয় দিতে লাগিল। “‘বাবু’ তাহাকে কলিকাতায় বাড়ী কিনিয়া দিয়াছেন, বহুমূল্য আসবাবে তাহা সুসজ্জিত করিয়া দিয়াছেন, হীরা-মুক্তার অলঙ্কারে তাহার সর্বাঙ্গ সাজাইয়া দিয়াছেন, দাস, দাসী, গাড়ী, ঘোড়া, সমস্তই তাঁহার, এমন কি তাহার জন্য ‘বাবু বিবাহ পর্য্যন্ত করেন নাই। দাসীদ্বয় অবাক হইয়া তাহাদিগের কথা শুনিতেছিল, কিন্তু বিধবা মহিলাটী বোধ হয় তাহার অধিকাংশই শুনিতে পান নাই, কারণ তিনি তখন অবগুণ্ঠন টানিয়া দিয়া পুনরায় পূজা আরম্ভ করিয়াছিলেন। পূজা শেষ করিয়া বিধবা মহিলা জল হইতে উঠলেন, দাসীদ্বয়ও উঠিল, বেশ্যা দুইটিও পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিল। ঘাটের উপরে সঙ্গীত্রয় বেশ্যাদ্বয়ের জন্য অপেক্ষা করিতেছিলেন। বিধবা স্ত্রীলোকটি দূর হইতে লক্ষ্য করিয়া দেখিলেন, তাহার পর দরওয়ানকে ডাকিয়া তাহাদিগের মধ্যে একজনকে তাহার নিকটে ডাকিয়া আনিতে বললেন।
দরওয়ান পুরুষটিকে ডাকিবামাত্র সে ব্যক্তি আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া গেল ও সলজ্জভাবে ধীরে ধীরে বিধবার সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল, তখন রমণী হঠাৎ অবগুণ্ঠন মোচন করিয়া বলিয়া উঠিলেন, “মণিদাদা, আপনি আমাকে চিনিতে পারেন?” এই বলিয়া গলায় কাপড় দিয়া তাহাকে