ভবিতব্য
অনেকদিন পরে দেশে ফিরিয়া আসিয়াছিদেশে এখন সবই যেন নতুন মনে হইতেছে, সবই বড় মধুর লাগিতেছে। অনেকদিন পরে কলিকাতায় আসিয়া প্রাণের আনন্দে খুব ঘুরিয়া বেড়াইতেছি। থিয়েটার, সার্কাস, আলিপুরের চিড়িয়াখানা, যাদুঘর, ইডেন গার্ডেন্, গড়েরমাঠ দেখিয়া যেন আর আশা মিটিতেছে না। ইডেন গার্ডেনের সম্মুখেই জাহাজ লাগিবর জন্য মস্ত একটা নূতন ঘাট তৈার হইয়াছে। বিদেশ নাইবার পূর্ব্বে সেটা দেখিয়া যাই নাই, তাই প্রায় প্রত্যহই একবার করিয়া সেখানে যাইতাম। প্রতিদিন কত লোক আসিত, কত লোক জাহাজ চড়িয়া চলিয়া যাইত, তাই দেখিতাম।
জেটির উপরে ষ্টীমার স্টেসন, সেখানে অনেকগুলি লোক-লস্কর থাকে, তাহারা সকলেই প্রায় চট্টগ্রামনিবাসী, ক্রমে তাহাদিগের সহিত আলাপ হইয়া গেল। যে তাহাদিগের সারেঙ, সে কাজ না কিন্তু জেটির ডেকে বসিয়া জাল বুনিত ও আমার সহিত গল্প করিত। তাহার নাম আবদুল, বিশাল কর্ণফুলি নদীর তীরে তাহার বাস, পৃথিবীতে এমন দেশ নাই, যাহা সে দেখে নাই। আজীবন বড় বড় জাহাজে খালাসী ও লস্করের কাজ করিয়া বুড়া বয়সে সে এই জেটীর সারেঙের পদ পাইয়াছে। আবদুল ডেকে বসিয়া ক্ষিপ্রহন্তে জাল বুনিয়া যাইত,