সোণার বালা।
সে তাঁহার দেখা পাইল না। তবে শ্বাশুড়ী থাকিতে তাহাকে বাধ্য হইয়া প্রসাধন করিতে হইত, এবারে তাহাও হইল না।
রাজা দেশে ফিরিয়া সকলকে কলিকাতায় লইয়া যাইতে প্রস্তুত হইলেন। দাসী আসিয়া নিরুপমাকে বলিয়া গেল, “মহারাণী, মহারাজের হুকুম হইয়াছে সকলকে কলিকাতায় যাইতে হইবে।” নিরুপমা উত্তর করিল “মহারাজকে গিয়া বল আমি যাইতে পারিব না। আমি গেলে দেবসেবা হইবে না।” নিরুপমা স্বামীকে বড়ই ভয় করিত, তথাপি সাহস করিয়া এত বড় একটা কথা বলিয়া ফেলিল। দাসী উত্তর গুনিয়া চমকাইয়া গেল, কিন্তু সে কি করিবে, সেই উত্তর লইয়াই ফিরিল। মরণ সময়ে নিরুপমার শ্বাশুড়ী বলিয়া গিয়াছিলেন “মা, আমিত চলিলাম। শ্যামাদাসের ভাবগতিক দেখিয়া আমার বড়ই ভয় হইতেছে, বরাতে ভগবান যে কি লিখিয়াছেন তাহা বলিতে পারি না। যতদিন বাঁচিয়া থাকিবে, ততদিন কখনও গোপালের সেবা ভুলিও না। গোপাল অবশ্যই একদিন। মুখ তুলিয়। চাহিবেন।” গোপাল জগৎপুর রাজবংশের গৃহ-দেবতা। নিরুপমা জানিত শ্বাশুড়ীর চাইতে আপনার তাহার আর কেহই নাই, সেই জন্যই সে বলিয়াছিল, সে কলিকাতায় যাইবে না। কিন্তু তাহার সে আপত্তি টিকিলনা, রাজা বলিয়া পাঠাইলেন যে গোপারও কলিকাতায় বাইবেন। নিরুপমা আর কোনও উত্তর করিলন, কলিকাতায় যাওয়াই স্থির হইল। দাসদাসীআত্মীয়াগণ জিনিষ পত্র গুছাইয়া কলিকাতা স্বাত্রা করিলেন।
কলিকাতায় জগৎপুরের রাজা প্রকাও বাড়ী করিয়াছেন, তিন মহল বাড়ী, সদর বাড়ীতে রাজা বাস করেন, দ্বিতীয় মহলে ঠাকুর বাড়ী, অন্দর