পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

মহলে নিরুপমা থাকে। রাজা কখনও অন্তঃপুরে প্রবেশ করেন না, কিন্তু দেবসেবা বা অন্দর-মহলের কোন ব্যবস্থার অভাব নাই। প্রত্যেক মহলের জন্য স্বতন্ত্র বন্দোবস্ত আছে, স্বতন্ত্র কর্ম্মচারী নিযুক্ত আছে, তাহার নিরুপমার আদেশে দেবসেবা ও অন্দরমহলের কার্য্য নির্ব্বাহ করিয়া থাকে। নিরুপমা হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিল, এতদিনে সে নিশ্চিন্ত হইল।

 বহুদিন মেয়েটিকে না দেখিয়া নিরুপমার মাতা বড়ই অস্থির হইয়া উঠিলেন। তিনি ভাবিয়াছিলেন যে জামাই এখন রাজা হইয়াছে, মেয়ে এখন সর্ব্বময়ী কর্ত্রী, এখন চেষ্টা করিলেই মেয়েটিকে দেখিতে পাইবেন। কিন্তু তিনি অনেক সাধ্যসাধনা করিয়া ও স্বামীকে কলিকাতায় পাঠাইতে পারলেন না। অবশেষে তাহার কাঁদাকাটিতে জ্বালাতন হইয়া নিরুপমার পিতা চূড়ামণি যোগে পত্নীকে লইয়া গঙ্গাস্নান করিতে কলিকাতায় যাইতে সন্মত হইলেন। কলিকাতায় আসিয়া, একবার কন্যার সহিত সাক্ষাং করিবার জন্য উভয়েই বড় ব্যাকুল হইয়া পড়িলেন। অনেক বাক্ বিতণ্ডার পরে স্থির করিলেন যে নিরুপমার বাড়ীতে গিয়া তাহাকে দেখিয়া আসাই ভাল।

 একদিন অপরাহে একখানি ভাড়াটিয়া গাড়ী কলিকাতায় জগৎপুরের রাজবাড়ীর ফটকে প্রবেশ করিল, গাড়ীতে স্ত্রীলোক দেখিয়া সদর বাড়ীর লোকে গাড়ী অন্দরে পাঠাইয়া দিল, নিরুপমার পিতা সদরে বসিয়া রছিলেন। নিরুপমার মাতা গাড়ী হইতে নামিয়া লোকজন দেখিতে না পাইয়া বড়ই আশ্চর্য্য হইলেন। অনেকক্ষণ পরে একজন দাসী আসিয়া তাহাকে দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কোথা থেকে আসছ'গা? নিরুপমার মাতা গ্রামের নাম করিবামাত্র সে বলিয়া উঠিল “তবে বুঝি

১৪৬