গুচ্ছ।
হস্ত, যে প্রবোধ বলিয়াছিল সে স্ত্রীজাতিকে কুষ্ঠব্যাধির ন্যায় ঘৃণা করে, যে প্রবোধ তাহার ভারত-যুদ্ধে মধ্যম পাণ্ডব, সেই প্রবোধের এই কাজ! বিবাহিতের দল তাহার অবস্থা দেখিয় তাহাকে ঘিরিয়া তাণ্ডব নৃত্য জুড়িয়া দিল। পুলিন বহুকষ্ট্রে তাহাদিগের ব্যূহ ভেদ করিয়া বাহিরে আসিল, আসিয়া দেখিল সম্মুখেই প্রবোধ। কিন্তু প্রবোধ যখন তাহাকে দেখিয়া সলজ্জভাবে নতদৃষ্টিতে পাশ কাটাইয়া চলিয়া গেল, তখন তাহার আর কিছুই বুঝিতে বাকি রহিল না।
রাগে, লজ্জায় অপমানে পুলিন যেন কেমনতর হইয়া গেল সে কেবল বসিয়া বসিয়া ভাবিত যে মূঢ় মানব তাহার উচ্চ উদ্দেশ্য বুঝিতে পারিল না, সকলে মিলিয়া তাহার জীবনের ব্রত পণ্ড করিয়া দিল। সে স্থির করিল সে নিজে জগতের আদর্শ হইয়া থাকিবে, কখনও স্ত্রীজাতির ছায়া মাড়াইবেন।
২
অসভ্য জগৎ যেমন ভাবে চলিতেছিল্ ঠিক তেমনি ভাবেই চলিয়া যাইতে লাগিল। পুলিনের উচ্চ আদর্শ মূঢ় মানবকে মোহ মুক্ত করিতে পারিলনা। দেখিয়া শুনিয়া মানুষের উপরে পুলিনের একটা বিজাতীয় ঘূণা জন্মিয়া গেল, তাহার আইন পড়া আর শেষ হইলনা; সে মফস্বলের একটি কলেজে চাকরী লইয়া বিদেশে চলিয়া গেল। পুলিন পিতামাতার একমাত্র সন্তান, তাহার পিতা নব্য তন্ত্রে শিক্ষা দীক্ষা লাভ করিয়াও প্রাচীন শিক্ষার প্রভাব একেবারে বিস্তৃত হইতে পারেন নাই। এক মাত্র পুত্র সেও বিবাহ করিলনা; বংশ লোপ হইবে, পিণ্ডলোপ হইবে, পিতৃপিতামহের ভিটায় সন্ধ্যাকালে দীপ জ্বলিবেন, এই চিন্তা শেষ বয়সে