নিয়তি।
আমাদের উদর পূরণের উপায়। গণনার যে ফল প্রত্যক্ষ করিয়াছি তাহা অন্যথা হইবার নহে, আপনি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্রাহ্মণ, অর্থের জন্য আপনার নিকট মিথ্যা বলিতে পারিব না।” এই কথা বলিয়া সে গৃহ হইতে নিস্ক্রান্ত হইল; বিদায়, পাথেয় প্রভৃতি বিস্মৃত হইয়া তৎক্ষণাৎ গ্রাম পরিত্যাগ করিল। তাহার পর সে কৃষ্ণকায় জ্যোতিষীকে বিদ্যাকাঠী গ্রামে কেহ দেখে নাই। জীবনমোহন তাহার অনেক অনুসন্ধান করিয়াছিলেন, কিন্তু বিশাল বঙ্গদেশের বক্ষেদেশে সে কোথায় লুকাইয়াছিল তাহা কেহ সন্ধান করিয়া উঠিতে পারে নাই। মাধুরীর বয়স যত বাড়িতেছিল জীবনমোহনের বিষণ্ণতাও তত বাড়িতেছিল। পুত্রের নিকটে মাধুরীর ভবিষ্যতের কোন কথা বলিয়া বৃদ্ধের মনের তৃপ্তি হইত না, কারণ পুত্র নব্যতন্ত্রে দীক্ষিত, তিনি কুসংস্কারের সীমা অতিক্রম করিয়াছিলেন।
মাধুরীর বিবাহের বয়স হইল। প্রমোদাসুন্দরীর ইচ্ছা ছিল যে অষ্টম বর্ষে গৌরীদানের ছলে একটি দরিদ্রের পুত্র ক্রয় করির লালনপালন করেন, কিন্তু জীবনমোহন তাহাতে অমত করিলেন। প্রমোদাসুন্দরী গৌরীদানে শ্বশুরের অমত দেখিয়া আশ্চর্য্যান্বিতা হইলেন, কারণ তিনি জানিতেন যে জীবনমোহন নিষ্ঠাবান হিন্দু। দেখিতে দেখিতে মাধুরী দ্বাদশবর্ষে পদার্পণ করিল। তখন দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া জীবনমোহন পৌত্রীর বিবাহের জন্ত যত্নবান হইলেন। প্রাণমোহন কোনদিনই মাধুরীর বিবাহের কথায় কর্ণপাত করেন নাই, তাঁহার বিশ্বাস ত্রয়োদশবর্ষ উত্তীর্ণ না হইলে কুমারীর বিবাহ হওয়া উচিত নহে। বঙ্গদেশের ব্রাহ্মণসমাজে কর্ত্তৃত্ব করিয়া, কুলাচার্য্য ও গ্রহাচার্য্যগণের উদর পূরণ