পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

প্রাণমোহন চৌধুরী বিধবা কন্যার বিবাহ দিবে আত্মীয় স্বজন অনেকেই ধর্ম্মভয় ও সমাজের ভয় দেখাইয়া প্রাণমোহনকে নিরস্ত করিবার চেষ্টা করিল, কিন্তু তিনি সে প্রকৃতির লোক ছিলেন না। তিনি বড় বেশী কথা কহিতেন না! কিন্তু কেহ তাঁহাকে সঙ্কল্প হইতে বিচলিত করিতে পারিত না। কান্তি বিবাহের কথা শুনিয়া লজ্জায় মরিয়া গেল, প্রাণমোহন যখন তাহার নিকট বিবাহের প্রস্তাব উপস্থিত করিলেন তখন সে কি উত্তর দিবে ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিল না, নীরবে মুখ নত করিয়া রহিল। প্রাণমোহন ভাবিলেন বিবাহে তাহার সম্মতি আছে। তখন তিনি বিবাহের উদ্যোগে ব্যস্ত হইলেন।

 মাধুরী যখন বুঝিল যে পিতা তাহার বিবাহ দিতে স্থিরপ্রতিজ্ঞ হইয়াছেন তখন আকুল হইয়া পিতামহকে সংবাদ দিবার জন্য ব্যস্ত হইল। জীবনমোহন কোথায় গিয়াছিলেন তাহা কেহ জানিত না, তিনি অর্থের আবশ্যক হইলে মধ্যে মধ্যে দুই একখানি পত্র লিখিতেন মাত্র, তারপর আর কোন ঠিকানা পাওয়া যাইত না। মাধুরী অনেক সন্ধান করিয়াও তাঁহাকে পাইল না।

 প্রচুর অর্থব্যয় করিয়া প্রাণমোহন বঙ্গদেশের পণ্ডিতসমাজের নিকট হইতে বিধবাবিবাহের ব্যবস্থা আনাইয়াছিলেন। বিবাহের দিন স্থির হইয়া গেল; গৃহে উৎসব আরম্ভ হইল। বিবাহের দিন প্রভাতে যখন নহবৎ বাজিয়া উঠিল তখন মাধুরী ঠাকুরঘরে প্রবেশ করিয়া দরজা বন্ধ করিয়া দিল, সমস্ত দিনে কেহ আর তাহাকে বাহির করিতে পারিল না। সন্ধ্যাসমাগমে প্রাণমোহন যখন কন্যাদান করিতে প্রস্তুত হইলেন, কাস্তি যখন বরবেশে সভায় উপস্থিত হইল, তখন মাধুরীকে আর কেহ খুঁজিয়া

২০