পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রতীক্ষায়।

অনেকক্ষণ ধরিয়া পথ চলিয়া এক্কার নিকটে উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম ঘোড়াটি স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া আছে ও মধ্যে মধ্যে করুণস্বরে ডাকিতেছে। আমার আদেশে এক্কাওয়ালা ঘোড়া খুলিল ও বাক্স এবং বিছানা মাথায় করিয়া লইল। আমি একহাতে লণ্ঠন ও একহাতে ঘোড়ার লাগাম ধরিয়া অগ্রসর হইলাম।

 অন্ধকারে পথ চিনিতে না পারিয়া প্রথমে বারান্দার যে স্থানে উঠিয়াছিলাম সেস্থানে পৌঁছিতে পারিলাম না। এইবারে অট্টালিকার যে অংশে পৌঁছিলাম সেস্থানে বারান্দার অধিকাংশ খিলানগুলিই পড়িয়া গিয়াছে, কেবল দুই একটি মাত্র অবশিষ্ট আছে। বারান্দায় উঠিয়া দেখিলাম যে বৃষ্টির জল আসিয়া সেস্থানটি আশ্রয়ের অযোগ্য করিয়া তুলিয়াছে। এক্কাওয়ালা একটি থামে ঘোড়া বাধিয়া আর একটী থামের আশ্রয়ে বাক্স ও বিছানা রাখিল। বারান্দার পশ্চাতে অনেকগুলি বড় বড় ঘর আছে বলিয়া বোধ হইল, কারণ আলোক দেখিয়া অনেক বাদুড় ও চামচিকা ঘুরিয়া বেড়াইতে আরম্ভ করিল। আমি প্রস্তাব করিলাম যে ঘোড়া এইখানে রাখিয়া আমরা ঘরের ভিতর আশ্রয় লই। এক্কাওয়ালা তাহাতে ঘোরতর আপত্তি উত্থাপন করিল। সে বলিল যে, এই বাড়ীতে সয়তান ও জিন ব্যতীত আর কেহই বাস করে না; আমরা যদি এই বারান্দায় রাত্রিযাপন করিয়া সকালে প্রাণ লইয়া পলাইতে পারি তাহা হইলেই মঙ্গল, ঘরের ভিতরে প্রবেশ করিলে আর কাহাকেও ফিরিতে হইবে না। আমি তাহার আপত্তি অগ্রাহ্য করিয়া পূর্ব্বের ন্যায় একহাতে তাহাকে ধরিয়া ও অপর হাতে লণ্ঠন লইয়া প্রথম ঘরে প্রবেশ করিলাম।

 সেই প্রকাও অট্টালিকায় রাত্রিবাসের উপযুক্ত স্থান খুঁজিয়া বেড়াইতে

২৭