প্রতীক্ষায়।
প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড ঘর। এক্কাওয়ালা আর চলিতে পরিল না, সে থামের একপাশে বসিয়া পড়িল, আমিও হতাশ হইয় তাহার পার্শ্বে বসিয়া পড়িলাম। এইরূপে কতক্ষণ কাটিল মনে নাই। বৃষ্টি কমিয়া আসিতেছিল। কিন্তু ঝড় বাড়িতে ছিল। শীতের তাড়নায় থামের আশ্রয় ত্যাগ করিতে বাধ্য হইলাম। ঘুরিতে ঘুরিতে বারান্দার এককোণে আসিয়া দেখিলাম যে ত্রিতলে উঠিবার একটি ছোট পাথরের সিঁড়ি আছে, উপরে যেন একটি ক্ষীণ আলোক দেখা যাইতেছে। এক্কাওয়ালাকে আলোকের কথা বলিবামাত্র সে কাঁদিয়া উঠিল, বলিল প্রাণ যদিও বাঁচিত কিন্তু এখন আর বঁচিল না, জিনেরা যে আগুনে মানুষ পোড়াইয়া খায় তাহারই আলোক দেখা যাইতেছে। তাহার কথা গ্রাহ্য না করিয়া তাহাকে টানিয়া উপরে তুলিলাম।
অট্টালিকাটি এইস্থানে ত্রিতল, মুতরাং বারান্দাও ত্রিতল। সিঁড়ির উপরে একটি ঘরের ভিতর হইতে ক্ষীণ আলোকের রেখা আসিতেছিল। ঘরটি অট্টালিকার অন্যান্য ঘরের ন্যায় প্রকাণ্ড, ইহারও চৌকাঠ ও কপাট প্রভৃতি নষ্ট হইয়া গিয়াছে, তবে তাহার পরিবর্ত্তে পুরাতন কাঠ, মাসের বেড়া ও মাটী দিয়া খিলানগুলি বন্ধ করিয়া রাখা হইয়াছে। পুরাতন কাঠের ছিদ্রপথে যে আলোক বাহির হইতেছিল, আমরা দ্বিতল হইতে তাহাই দেখিতে পাইয়াছিলাম। এক্কাওয়ালা কিছুতেই এই স্থান হইতে নড়িতে চাহিল না। ভাবিলাম তাহাকে যদি ছাড়িয়া দিই তাহা হইলে সে পলাইয়া যাইবে এবং অন্ধকারে পথ না পাইয়া হয় ত মরিয়া যাইতে পারে। অগত্যা তাহাকে টানিয়া লইয়া দরজার অনুসন্ধান করিয়া