পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

 দেশে আর খাঁটি দুধ মিলিবার উপায় নাই, গয়লা বেটারা সব কলিকাতার চালান দিতে আরম্ভ করিয়াছে। বাঁড়ুয্যে সেদিন খুব ঘটা ক’রে মেয়েটার বিয়ে দিলে, তা বাজারে একটু ভাল ক্ষীর আর খুঁজে পেলে না। পাইবার যে কি? গয়লা বেটাদের জ্বালায় বালিএরারুট এমন কি পুকুরের জলের দরও চড়িয়া গিয়াছে। বন্দোপাধ্যায় অনেক করিয়া বলিয়া গিয়াছিল, সেই জন্য এবং মিষ্টিটা ক্ষীরটা কি রকম উতরাইল তাহা পরখ করিয়া দেখিবার জন্য একবার গিয়াছিলাম মাত্র। তা গয়লা বেটাদের জ্বালায় দই ক্ষীর ছানা কিছু কি আর মুখে করিবার যো আছে? বাঁড়ুয্যে মেয়েটার বিয়ে দিলে বটে, কিন্তু লোকে বলিল মেয়েটাকে সমুদ্রে দিল। কায়স্থপাড়ার গিরিশ বসু দুর্জ্জয় মাতাল, সে বিবাহের রাত্রে বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলিয়া বসিল, “দাদাঠাকুর মেয়েটাকে জলেত ফেল্লেই, তার আর কোন কথা নাই, কিন্তু এ যে বাধা অতলস্পর্শ, একটা শব্দও হ’ল না।” গ্রামের লোকে হাসিয়া উঠিল, বাঁড়ুয্যে বেচারা কি করে, তাহাদিগের সঙ্গে কাষ্ঠহাসি হাসিয়া উঠিল। বরের একটু বয়স বেশী বটে, তবে এমন কিছু বেশী নয়; আমাদের বয়সে অনেক বেশী বুড়ার বিবাহ দেখিয়াছি। তা আমার ত আর কোন কথা বলিবার যো নাই। বরের বয়স আন্দাজ পঞ্চাশ পঞ্চান্ন, দু‘এক গাছা চুল পাকিরাছে মাত্র, গালে ঈষৎ টোল খাইয়াছে; তাহা আবার সব সময়ে বুঝা যায় না, সুতরাং দুএকটা দাঁতও পড়িয়াছে। ছোড়াগুলা বলিল, “বরের বয়স ৭০।৭২”। রং এমন কি কালো, আমার বয়সে আমি ঢের বেশী কালো দেখিয়াছি, কিন্তু

৪২